নাজিম উদ্দীন চরফ্যাশন প্রতিনিধি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন সরকারি জায়গা দখল করে এবং গুরুত্বপূর্ন ব্যস্ততম মেইন সড়কের পাশে গাছ রেখে দিন-রাত দেদারসে চলছে স-মিল (করাত কল) ব্যবসা। ফলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা সহ পরিবেশের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। অন্যদিকে স-মিলের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। কোনভাবেই লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হচ্ছে স-মিল মালিকের। এমন তথ্য পাওয়া গেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর চরমানিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গেইট সংলগ্ন মেইন সড়কের পাশে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাবুরহাট-দক্ষিণ আইচা গুরুত্বপূর্ন ব্যস্ততম মেইন সড়কের পাশে নিজ নামে স-মিল ব্যবসা পরিচালনা করছেন চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিজল সিকদার। তার সমিলে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাছ এনে সড়কের দু’পাশে ফেলে জমাট করে রেখেছেন। এতে যেকোনো সময়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। মেইন সড়কে ট্রাক, ট্রলি ও ভ্যানে গাছ উঠা নামা করানের সময়ে এম্বুলেন্স সহ বিভিন্ন যানবাহন আটকে চরম ভোগান্তির সৃষ্টির হচ্ছে। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী সহ সাধারণ পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। তার স’মিল সংলগ্ন পশ্চিম পাশে একটি কিন্ডারগার্টেন, দক্ষিণ পাশে একটি প্রাইমারী ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থীদের এখন পড়াশোনা করা দায় হয়ে পড়েছে।
উত্তর চরমানিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন সহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউপি সদস্য রফিজল সিকদার তার সমিলটি সকাল ৬ টায় চালু করে রাত ১০ টায় বন্ধ করে সারাদিন শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ। পরিবেশের বিপর্যয়ে হয়ে দাড়িয়েছে। কোনো কথাই শুনছে না সে। সরকারি নিয়মনীতি না মেনে স-মিল ব্যবসা পরিচালনা করায় প্রতিদিন সাবাড় হচ্ছে বনজ, ফলদসহ নানা প্রজাতির গাছ। আর সেইসাথে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকির অভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন মেইন সড়কে গাছ রেখে সমিল ব্যবসা পরিচালনা করছে। দ্রুত সমিলটি অপসারণ করার দাবি তাদের।
এ ব্যাপারে স-মিল মালিক ইউপি সদস্য রফিজল সিকদার বলেন, আমার স-মিলে স্কুল শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। চরফ্যাশন বনবিভাগের এক কর্মকর্তাকে দফায় দফায় টাকা দিয়ে নিজ নামে তারপর লাইসেন্স নিয়েছি। আমার জায়গায় আমি গাছ রেখেছি, কারো জায়গায় না। সড়কের ওপরে গাছ রাখার লাইসেন্স আছে।
চরমানিকা বন বিট কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, সমিল মালিক রফিজল সিকদারকে মেইন সড়ক থেকে ১০ ফুট দূরে গাছ রাখার জন্য বারংবার বলার পরও সে কোনো কথা শুনছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে খুব দ্রুত ওই সমিলে অভিযান চালানো হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিন মিথি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। ওই সমিলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করবো।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান