ডেস্ক রিপোর্ট।। ভোলার লালমোহন উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকালে উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের দেবিরচর বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই গ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে গুরুতর আহত ৫ জনকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে।
জানা গেছে, বদরপুর ইউনিয়ন বিএনপির (উত্তর) সভাপতি শহিদুল্যাহ মেলকার গ্রুপ ও সাবেক বিএনপির নেতা কামাল হুইচ গ্রুপের মধ্যে সোমবার সকালে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শহিদুল্যাহ মেলকারের লোকজন বগি দা, ছেনি, রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কামাল হুইচের লোকজনদের ওপর হামলা চালায়। পরে তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রুপ। এই সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বদরপুর ইউনিয়নের দেবিরচর এলাকার সাবেক বিএনপি নেতা কামাল হুইচ বলেন, গত ৫ আগস্টের পর শহিদুল্যাহ মেলকার ও তার লোকজন দেবিরচর এলাকায় বিভিন্ন চাঁদাবাজি শুরু করেন। তারা এলাকার নূর ইসলামের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা নেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে শহিদুল্যাহ মেলকার ও তার লোকজন আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। পরে আমি উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জানালে তারা দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেন এবং চাঁদা টাকার ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন শহিদুল্যাহ মেলকার। মূলত এ নিয়েই তার সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, আমি দেবিরচর বাজারের ইজারাদার আসাদ মেলকারের থেকে বাজারের খাজনা উঠানোর জন্য কিনে নেই। তবে শহিদুল্যাহ মেলকার আমাকে বাজার থেকে খাজনা তুলতে দিচ্ছিল না। শহিদুল্যাহ মেলকার নিজে ও তার লোকজন আমাদেরকে বাজারে খাজনা উঠাতে বাধা দিতে এবং মারধর করার জন্য রোববার বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে দেবিরচর এলাকায় আনেন। বিষয়টি আমি জানার পর রোববার রাতেই থানায় অবহিত করেছি। তখন থানা থেকে আমাকে বলা হয়েছে সমস্যা হলে তাদেরকে জানাতে।
সাবেক বিএনপি নেতা কামাল হুইচ আরো বলেন, তবে সোমবার সকালে শহিদুল্যাহ মেলকার ও তার লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। তখনই বিষয়টি আমরা লালমোহন থানা পুলিশ ও নৌবাহিনীকে জানাই। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই শহিদুল্যাহ মেলকার ও তার লোকজন আরো বেপরোয়াভাবে আমাদের ওপর হামলা চালাতে থাকে। তাই তাদের আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ অভিযোগের ব্যাপারে বদরপুর ইউনিয়ন উত্তর শাখা বিএনপির সভাপতি শহিদুল্যাহ মেলকারের মুঠোফোনে কল দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি কল কেটে দেন। এরপর একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেবিরচর বাজারের ইজারাকে কেন্দ্র করে অনেকদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। বিএনপির নেতৃবৃন্দ তাদেরকে মিমাংশ করার একাধিকবার চেষ্টা করেছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিত শান্ত করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান