ডেস্ক রিপোর্টঃ-
ভোলা জেলাধীন মনপুরা উপজেলার ৬ নং সোনারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুদ্দিনে বিরুদ্ধে স্কুলে না গিয়ে বছরের পর বছর বেতন তোলার অভিযোগ রয়েছে। তথ্যসূত্রে দেখা যায়, মনপুরায় প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুদ্দিন আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট পরিবার হিসেবে বছরের পর বছর বিদ্যালয়ে না গিয়ে বেতন তুলে নেন এবং দুই থেকে এক এক মাস পর পর গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রদান করতেন, উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নেই এমন কয়েকটি হাজিরা খাতার ছবি পুরো নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক গোপনে মনপুরায় অবস্থান করেন এবং গোপন ক্যামেরায় তথ্য অনুসন্ধান করেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুরো ঘটনার সত্যতা রয়েছে। আমাদের নিউজ টিমের গোপন ক্যামেরায় প্রধান শিক্ষকের শিক্ষক হাজিরা খাতার ছবি তুলতে সক্ষম হয়। ছাত্র অভিভাবক ও শিক্ষকদের মতামত নিতেও সক্ষম হয় আমাদের নিউজ টিম। অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় দেখা যায়, শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষক সাইফুদ্দিনের স্বাক্ষর নেই ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগষ্ট, সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে। ওই শিক্ষক হাজিরা খাতায় এছাড়া অন্য সকল শিক্ষকের স্বাক্ষর রয়েছে।
এ ছাড়া অনুসন্ধানে আরও দেখা যায় অভিযুক্ত শিক্ষক পরিবারের মোট ১১ জন আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকুরী নেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুদ্দিন এর বড় বোন মনোয়ারা বেগম মনপুরা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের আরেক ভাই শামসুদ্দিন সাগর মনপুরা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি প্রায় ১০ বছর যাবত। উল্লেখ্য শামসুদ্দিন বর্তমানেও মনপুরা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং সরকারি চাকুরিতে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক পদে কর্মরত। এছাড়া ৬নং সোনার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের আপন ছোট ভাই আফাজউদ্দিনও চাকরি করেন ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনপুরা শিক্ষা অফিসের একজন স্টাফ জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুদ্দিন এর এসব অনিয়মের বিষয়গুলো মনপুরা শিক্ষা অফিস সব জানেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বড় বোন শিক্ষক সমিতির সভাপতি হওয়ায় তিনি সকল কিছু ম্যানেজ করে রাখতেন।।
অভিযোগের বিষয়ে ভোলা জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তদন্তপূর্বক দ্রুতই তিনি ব্যবস্থা নিবেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়মের বিষয়ে, মনপুরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে লাইন কেটে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুদ্দিন সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে রং নাম্বার বলে লাইন কেটে দেন।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে দ্রুত প্রশাসনিক কারণে বদলি পূর্বক তদন্ত গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহল।। পুরো অনিয়মের বিষয়ে মনপুরা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তেমন কোন মনিটরিং ছিল না বলে এ ধরনের অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বছরের পর বছর।
চলছে আমাদের আরো অনুসন্ধান অভিযুক্ত শিক্ষক নানা অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন দেখতে চোখ রাখুন দ্বিতীয় পর্বে।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান