।। তাইফুর সরোয়ার।।
দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। সংক্রমণের মাত্রা কমাতে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য লকডাউন চালু করে, যা ছিল অনেকটা ঢিলা ঢালা। পরবর্তীতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চালু করে এবং পরবর্তীতে আরো সাত দিন বাড়িয়ে আগামী ২৮ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে।
সাধারণ মানুষ লকডাউনের প্রথম দিকে ঘরে থাকলেও, দিন যত যাচ্ছে তাদের আর ঘরে রাখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন প্রয়োজনে তারা বাইরে বের হচ্ছে। রাস্তা, দোকান, হাট বাজারে যাচ্ছে।
গত বছর করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এবং ব্যক্তি পর্যায় থেকে অনেক ত্রান ও অর্থিক সহায়তা পেয়েছিলেন। কিন্তু এবছর ত্রান ও অর্থিক সহায়তা তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। সরকার থেকে কিছু সহায়তা করা হচ্ছে যা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য।
লকডাউনের মধ্যেও মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছে। জীবিকার তাগিদে তাদের জীবন এখানে তুচ্ছ। ঘরে অর্ধাহারী সন্তানের নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে, টাকার অভাবে অসুস্থ বাবা মায়ের ঔষধ কিনতে না পারায়, কোন কর্মীক পুরুষ ই নিজেকে ঘরে আটকে রাখতে পারে না। তাই তারা কেউ বোরাক নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন, কেউ বা দোকানের ঝাপ খুলছেন। তাদের কাছে করোনা সংক্রমণের ভয়, প্রশাসনের জরিমানা কিংবা পুলিশের বেত্রাঘাতের চেয়েও ক্ষুধার জ্বালা প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
অভুক্ত মানুষকে লকডাউন দিয়ে ঘরে আটকে রাখা যাবে না। করোনা সংক্রমণের মাত্রা কমাতে লকডাউনকে সর্বচ্চো কার্যকর করতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা নিশ্চত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে আরও এগিয়ে আসতে হবে।
করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমে যাবে এক সময়, ইনশাআল্লাহ। আজকের দুর্দিনে একটু সহোযোগিতা, সামান্য ভালোবাসা, পাশে দাঁড়ানোর প্রয়াসগুলোই হয়ে রইবে আগামীর প্রেরণা ও ইতিহাস।