চরফ্যাসনে টর্নেডোর তান্ডবে শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত, আহত ১৫

 

 

 

চরফ্যাশন প্রতিনিধি

আকস্মিক টর্ণোডোতে ভোলার চরফ্যাশনে ৩গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধস্থ হয়েছে। ঘর ও গাছচাপা পড়ে আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে এ টর্ণেডো আঘাত হানে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানাগেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক শুকনো খবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা শেষে গৃহহারাদের সরকারি সহায়তায় আনার কথাও জানান তিনি।
আজ রোববার দুপুরে চরফ্যাসন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আবুল কালামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ৩টি ঘরের সবকয়টি ধুমরে মুচরে পড়ে আছে। ঘরের চাল বেড়ার উপর বড় বড় গাছের ডালপালা পড়ে আছে। ধংসস্তুপের নিচ থেকে আসবাবপত্র ও নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল বের করার চেস্টা করছেন পরিবারের সদস্যরা। বিকাল বেলা গিয়েও ওই বাড়িতে একই অবস্থা দেখা যায়। সারাদিন অনাহারের পরে খোলা আকাশের নিচে খাবার রান্না করছে গৃহীনিরা। ওই বাড়ির ১৩ সদস্যের মধ্যে ৫ জনই ঘরচাপা পড়ে আহত হয়েছেন। শহীদ খা জানান, তার ঘরের ৩ খাটে পরিবারের সবাই ঘুমন্ত ছিল। তিনি সজাগ হয়ে দেখেন স্ত্রীসহ ঘরচাপা পড়ে আছে। ডাক চিৎকার করার অনেক পরে বেড়া ভেঙে ও গাছ সরিয়ে ছেলেরা তাদের ২জনকে উদ্ধার করেছে। তার পরিবারের ৫ জনই আহত হন ঘরচাপা পড়ে। একই অবস্থা প্রতিবেশি ফজলুল করিমের পরিবারের। পুরো ঘরটি ভিটির বাইরে পড়ে আছে। শূণ্যভিটায় সারাদিন কাটলেও কি করে মাথা গোজাবার ঠাই করবে তার হিসাব মিলাতে পারেনি। সারাদিন রান্না হয়নি ফজুলল করিমের ঘরে। প্রতিবেশির দেয়া খাবারে প্রথম দিনের দুপুর কেটেছে তার। একই এলাকায় মাওলানা ছালাউদ্দিন, সোহাগ সহ ৩০টি পরিবারের একই অসস্থা।
বিধ্বস্ত ঘর মালিক আবুল কালাম জানান, ঘরের বাসিন্দারা যার যার মতো শুয়ে বসে ছিলেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই যাহার উপর থেকে ঘরটি উড়ে যায় । মুহূর্তে মধ্যে ঘরের ঘরের চকি- বিছানাসহ অন্যান্য মালামাল উড়েগেছে। ঝড়ের পর শুন্যভিটা পড়ে থাকলেও এই ভিটায় যে ঘর ছিল এমন কোন চিহ্ন নেই।
গৃহকত্রী সারমিন আকতার জানান, আকষ্মিক বাতাসের চাপে মাথার উপরের ঘর ভিটায় মিশে যায়। স্বামী-সন্তানসহ ঘরের নীচে চাপা পড়েন তিনি। কয়েক মিনিট স্থায়ী এই ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় বসত ঘরটি।
আসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের অর্ধশতাধি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তালিকা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে শুকনো খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্ণবাসনে গৃহনির্মাণ সহায়তার দাবি করেছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, তাৎক্ষণিক শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। সোমবার ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে জেলা প্রশাসকের বরাদ্দকৃত ২ মে টন চাল বিতরণ করা হবে। তালিকা শেষে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থদের গৃহ নির্মাণেরও সহায়ার আশ্বাস দেন তিনি।

SHARE