টেকনাফের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা জাতির সামনে তুলে ধরেছেন প্রশাসন আর সাংবাদিকের মধ্যে সখ্যতার চিত্র। বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক লিখলে তার কি পরিণতি হয় মফস্বলে কাজ করেন যারা তাদের সবার জানা। কিছু না হউক পুরাতন মামলায় গোপনে আসামি করে রেখে যাবেন ্ওই কর্মকর্তা। হঠাৎ একদিন আদালত থেকে সমন কিংবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এলে তিনি জানতে পারেন। এ নিয়ে তাকে পোহাতে হয় নানা ঝক্কি ঝামেলা। এমন বহু ঘটনা রয়েছে। ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়। রিপোর্ট প্রকাশের পর অনেক পুলিশ কর্মকর্তা নিজেকে সুধরে নিয়েছেন। সাংবাদিককে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। এমন নজিরও রয়েছে।
দেশের জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত রক্তচক্ষু এড়িয়ে এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ মফস্বল সংবাদদাতারাই পত্রিকার প্রাণ। তারা পত্রিকার মূল স্তম্ভ। শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রিক কোন পত্রিকা হতে পারে না। ঢাকার জাতীয় পত্রিকাগুলো খোরাক নেয় মফস্বল থেকে। দেখা যায়, জাতীয় পত্রিকাগুলোর বেশির ভাগ খবরই মফস্বলকে ঘিরে। প্রশ্ন হলো, মফস্বল সংবাদদাতা কারা? গ্রাম-গঞ্জ, শহর-বন্দর, জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের আনাচে-কানাচে থেকে যারা সংবাদ সংগ্রহ করেন তারাই মফস্বল সাংবাদিক। ঢাকার সবক’টি জাতীয় দৈনিকের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একজন করে প্রতিনিধি রয়েছেন।
যারা পত্রিকার হয়ে সংবাদের সন্ধান করেন, সংবাদ পাঠান। আপ্রাণ চেষ্টা করেন তাদের নিজ নিজ পত্রিকার সার্কুলেশন বাড়াতে, চেষ্টা করেন বিজ্ঞাপন দিয়ে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে। এ লাইনে বেশ ক’বছর ধরে যোগ হয়েছে ইলেকট্রনিক মিডিয়া। তারাও থানায় থানায়, জেলায় জেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ করছেন। হাজারও সমস্যা, প্রতিকূল পরিস্থিতি সন্ত্রাসীদের হুমকি আর প্রভাবশালীদের রক্তচক্ষু এড়িয়ে কাজ করতে হয় মফস্বল সাংবাদিকদের। এসব হুমকি ধামকি মাথায় নিয়ে সংগ্রহ করা রিপোর্ট ছাপার অক্ষরে দেখলে তারা সব ভুলে যান। আবার দৌড়ান রিপোর্টের পেছনে, গ্রাম থেকে গ্রামে। এটাই মফস্বল সাংবাদিকতার প্রাথমিক চিত্র। ঢাকার অফিসে স্টাফ রিপোর্টারদের নির্দিষ্ট বিট থাকলেও মফস্বল সাংবাদিকদের বেলায় তা হয় না। তাদের একাধারে ক্রাইম, রাজনীতি, প্রশাসন, খেলাধুলাসহ সকল স্তরের রিপোর্টই পাঠাতে হয়। একই সঙ্গে ফটোগ্রাফারের কাজও তাদের নিজের।