মোঃ ইমরান হুসাইন মুন্নাঃ–
সারা বাংলাদেশের ন্যায় ভোলায়ও যখন করোনার প্রকোপে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নিরাপদ চিকিৎসার জন্য মানুষ দিক বেদিক ছুটছে। ঠিক তখনও চিকিৎসা সেবাতো দুরের কথা করোনার নমুনা সংগ্রহ করতেও পুরোপুরি অবহেলা ও ছলচাতুরি করছে ভোলার স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে কোন ধরনের রিপোর্ট না পেয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরন করেন অনেকেই। বিচারের দাবীতে গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে এমন ধরনের লিখিত অভিযোগ করেছেন সদর উপজেলার ওয়েষ্টার্ণ পাড়া ইউসুফ মঞ্জিলের বাসিন্ধা সুলতানা রাজিয়া নামের ৮৫ বছর বয়সের এক বৃদ্ধ রোগির ছেলে ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির ভোলা জেলা প্রতিনিধি এবং
দৈনিক দক্ষিণ প্রান্ত পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এডভোকেট নজরুল হক অনু।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, চলতি মাসের ১ তারিখে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী তাদের বাসায় করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য তিন সদস্যের একটি দল পাঠান। প্রতিনিধি দল সরকার নির্ধারিত ফি গ্রহণপূর্বক তার মা সুলতানা রাজিয়া এবং তার স্ত্রী সরকারী একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিদা আক্তার ও ছেলে নবম শ্রেণীর ছাত্র রিদমের নমুনা সংগ্রহ করে। ২ জুলাই বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ থেকে নমুনার রিপোর্ট ভোলায় এসে পৌছে কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের টেলিফোন নাম্বার নিলেও ফোনে কোন ম্যাসেজ কিংবা ফোন কলে বিষয়টি তাদেরকে জানায়নি। তারা ৭ জুলাই অন্য মাধ্যমে জানতে পেরে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করে। তাতে তারা জানতে পারে যে তাহার মা, স্ত্রী ও ছেলে ৩ জনেরই নমুনা সংগ্রহ যথাযথ পদ্ধতিতে নেওয়া হয়নি। বিধায় রিপোর্ট বাতিল (রিজেক্ট) করা হয়েছে। অথচ রিপোর্টের অভাবে তাহারা মায়ের যথাযথ চিকিৎসা করাতে পারেনি। করোনা রিপোর্ট না থাকায় হাসপাতালে রোগীর ভর্তি জটিলতা দেখা দেয়। জটিলতা কাটাতে সময় পার হয়ে যাওয়ায় তাহার মা গত ৫ জুলাই ঢাকার টিবি হাসপাতালে মুত্যুর কোলে হেলে পরেন। ভোলা সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ৪ জুলাই তাকে ভর্তি করা হলেও সেখানে কোন চিকিৎসা পাওয়া যায়নি। অভিযোগে তিনি আরো উল্লখ্য করেন, যদি ২ জুলাই রিপোর্টটি হাতে পেত তাহলে নমুনা বাতিল হলেও পুনরায় নমুনা দিতে পারতো। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রিপোর্টের সংবাদ তাদেরকে না দেয়ায় তাদের যেমন অপূরনীয় ক্ষতি করেছে তেমনি দায়িত্বহীনতারও চরম লংঘন করেছে। এছাড়া হাসপাতালের সরকারী টেকনোলজিষ্ট দিয়ে নমুনা সংগ্রহ না করে বাহিরের হাতুরে টেকনোলজিষ্ট দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যাদের নমুনা সংগ্রহের দক্ষতা নেই। এছাড়া তাদেরকে সরকারি ফির বাহিরে বাড়তি টাকা না দেওয়ায় তারা নমুনা যথাযথ ভাবে সংরক্ষিত করেনি। যে কারণে তার মা স্ত্রী ও ছেলের রিপোর্ট বাতিল হয়েছে। বর্তমানেও সিভিল সার্জন ঐ অদক্ষ হাতুরে টেকনোলজিষ্ট দিয়ে আরো রোগির নমুনা সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। যা ভোলাবাসীর জন্য অপুরনীয় ক্ষতির কারন হতে পারে বলেও তিনি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ্য করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিকি জানায়, তিনি ভূক্তভোগির স্বজনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যাতা প্রমানিত হলে উর্দ্ধতনের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে অইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী জানায়, তিনি রিপোর্টের বিষয়টি অবগত নয়, তবে করোনা সংক্রান্ত ইউনিটে ভিন্ন তত্বাবধায়ক রয়েছেন। সেই তত্বাবধায় করোনা সংক্রান্ত বিষয়টি দেখাশুনা করেন। তবে নমুনা সংগ্রহ বা রিপোর্ট বেশি হওয়ায় পজেটিব ছাড়া কাউকে ফোন করা হয়না।
এদিয়ে এক জন রোগির স্বজনদের সাথে এমন দ্বায়িত্বহীনতা কর্মকান্ডের কথা ছড়িয়ে পরলে ভোলা স্বাস্থ্য বিভাগের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে জনসাধারন। তারা মনে করে স্বাস্থ্য বিভাগের এমন দুর্গতি থাকলে এবং এসব ঘটনার বিচার না হলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে হেলে পরবে শত মানুষ। এদেরকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সুশিল সমাজ।