মনজু ইসলাম/টিপু সুলতানঃ
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় রাতে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা প্রশাসক। ব্যাতীক্রমধর্মী এই ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি ও গুরুত্বের কথা জানালেন জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক। এদিকে ইলিশায় পুরাতন বেড়িবাঁধ কেটে ফেলায় আতংকে রয়েছেন মেঘনা পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। ১০ নাম্বার বিপদ সংকেত চললেও ডাল চর, কলাতলির চর, চর জহিরুদ্দিন, কুকড়ি মুকরি, ধুবলার সহ সাগর বুকের চরের মানুষ ফেরেনি আশ্রয়কেন্দ্র, বিপর্যয়ের মধ্য ৩ লক্ষ মানুষ।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষের সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ত্রাণ মন্রনালয় ইতোমধ্যে নগদ ১০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন সাথে ২০০ মেট্রিকটন চালও দিয়েছেন।আশ্রয় কেন্দ্রের জন্য ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠিয়েছে। তার ১০০০ প্যাকেট সকালেই চরফ্যাশনের আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়স ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় ভোলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।জেলার ৬৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছ ৯২টি মেডিক্যাল টিম। এছাড়াও জেলা সদরসহ সাত উপজেলায় ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মানুষকে সতর্ক করতে উপকূলে চলছে প্রচারণা।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাসুদ আলম ছিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, বুলবুল মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৩ হাজার স্বেচ্চাসেবী। ২হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ছাড়াও ত্রান মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে মজুদ রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণ ও শুকনো খাবার।
ঝড়ের বিষয়ে মানুষকে জানাতে সিপিপি ও রেডক্রিসেন্ট কর্মীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিপিপির ১০ হাজার ২শ’ স্বেচ্চাসেবী প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভোলায় আজ সকাল খেকে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত চলছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও আজ সকাল থেকে বাতাসের বেগ বেড়েছে। চরফ্যাশনে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। পুরো জেলা মেঘাচ্ছন্ন। নদী এবং সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। অনেক জেলে তীরে চলে আসলেও চরবাসীরা এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি।
এদিকে সদর উপজেলার পুরোনো বেড়িবাঁধ কেটে ফেলায় মেঘনা পাড়ের মানুষ আতংকের মধ্যে রয়েছেন। ইলিশা জংশনের বাজার ব্যাবসায়ীরা জানান, নতুন বেড়িবাঁধ তৈরী করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরাতন বেড়িবাধ কেটে তার মাটি নতুন বাঁধে দেয়া ও নতুন বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না করতে পারায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
চরের মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনার ব্যাপারে কোষ্ট গার্ডের দায়িত্ব রত এক্সও লেপ্টেনেন্ট কমান্ডার নাজিউর রহমান ভোলা নিউজকে বলেন, বিচ্ছিন্ন চরবাসিকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সেখানে আমরা বোট পাঠিয়েছি তবে চরের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসছেন না। প্রয়োজনে আমরা আরো বোট পাঠাবো।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ভোলা নিউজকে বলেন, চরের মানুষ তাদের সহায় সম্বল ও গবাদি পশু রেখে আশ্রয় কেন্দ্র আসতে চাচ্ছেন না। আমরা তাদের নিশ্চিত করেছি তাদের সকল সম্পদের নিরাপত্তা দিবো। আশা করি দুপুরের মধ্যে ই সবাই আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসবে। তবে বন্ধ রয়েছে ভোলার সাথে সার দেশের যোগাযোগব্যবস্থা।
মনিরুল ইসলাম
ভোল-০৯.১১.১৯