আরিফুর রহমানঃ
ভোলা নিউজ-৩১.০৮.১৮
একের পর দল ও নাম পরিবর্তন করেও শেষ রক্ষা হলোনা ভোলার ভুয়া অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিনের। তার প্রত্যাশিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই অবৈধ ভাবে নিয়োগ ও সীমাহীন দুর্নীতিসসহ ১০ টি অভিযোগের প্রমান মেলায় তাকে বহিস্কার করেছেন কলেজে গভর্নিং বডি।
স্থানীয় সূত্রে ও কলেজ শিক্ষক কাউন্সিল জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতার আমলে রাজাপুর ইউনিয়নে জনতাবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিতকরেন জনৈক সিরাজুল ইসলাম। তখন সুচতুর নিজাম ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন। হঠাৎকরে নিজাম ভোলার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজনু মোল্লা পরিবারের খুবই কাছের মানুষে পরিনত হয়ে রাতের আধারে স্কুলটির নাম পরিবর্তন করে ওবাইদুল হক বাবুল মোল্লা মাদ্যমিক বিদ্যালয় বানিয়ে ফেলেন। সিরাজকে বাদ দিয়ে নিজেই স্বঘোষিত প্রধান শিক্ষক হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন। পরবর্তিতে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে মজনু মোল্লার রিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেন এই নিজম উদ্দিন। পরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও এলাকাবাসির রোসানলে পরে রাজাপুর থেকে পালায়ন করেন দুর্নীতিবাজ নিজাম। এর পর ইলিশায় এসে ১৯৯৮ সালে অনুমতি পাওয়া ইলিশা ইসলামিয় কলেজের কেরানী হিসেবে আন অফিসিয়াল নিয়োগ নিয়ে রাতের আধারে ইলিশা ইসলামিয়া কলেজকে তৎকালীন শীল্প ও বানিজ্যমন্ত্রীর বাবার নামে নাম করণ করে আজহার আলি কলেজ নামে সাইনবোর্ড শাটান সেই সময়ের তুখর বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন। ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতা থেকে যাওয়ার দিন রাতেই সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে আজাহার আলী বাদ দিয়ে মডেল শব্দ লাগিয়ে মোশারফ হোসেন শাহাজানকে প্রধান পৃষ্টপোষক বানিয়ে সাইনবোর্ড উঠিয়ে দেন দুর্ত নিজাম উদ্দিন। এর পর তার অধ্যক্ষের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মোশারফ হোসেনরে নামও সাইনবোর্ড থেকে সরিয়ে ফেলন দুর্নীতিবাজ নিজাম। শুরু হয় লাল্টু যুগের। তৎকালীন ছাত্রদলের সভাপতি লাল্টুর সাথে যোগ দেন কলেজকে এমপিও ভুক্তি করারর জন্য। এর পর ১/১১ সরকার দফায় দফায় তাকে দুর্নতির দায়ে গ্রেফতার করেন। ওয়ান ইলিভেন সরকার যাওয়ার পর এই ভুয়া অধ্যক্ষ আবার হাইব্রিড হিসেবে আওয়ামীলীগেই যোগদেয়ার চেষ্টা করেন নিজেকে রক্ষা করতে। কিন্তু দুর্নতি আর পাপের পরিমান এতো বেশি হয়ে গেছে যে, নিজেকে আর শেষ রক্ষা করতে পারেনি এই ভুয়া আধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন। ইলিশা ইসলামিয়া মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সর্বসম্মতিক্রমে তার বহিস্কার আদেশ কার্যকর করে। তার যায়গায় ভারপ্রপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় কলেজের সিনিয়র সহকারি অধ্যাপক মাজহারুল ইসলামকে।
কলেজ সূত্রে জানাযায়, কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন প্রত্যাশিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই অবৈধ ভাবে নিয়োগ ও সীমাহীন দুর্নীতিসসহ ১০ টি অভিযোগ পাঠানো হয় জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ভোলা ক্লিন ইমেজের সমাজ সেবক কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মাইনুল হোসেন বিপ্লব ভোলা সরকারি ফজিলাতুন নেসা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন মিলুকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই তদন্ত কমিটির তদন্তে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগসহ দুর্নীতির প্রমান মেলায় তাকে দশ কর্ম দিবসের মধ্যে কারন দর্শানোর জন্য বলা হলে তিনি কলেজে উপস্থিত হয়নি এবং জবাব না দেয়ায় আজ ইলিশা ইসলামিয়া মডেল কলেজের গভর্নিং বডির সর্বসম্মতির সিদ্ধান্ত ক্রমে তাকে বহিস্কার করা হয়। এবং চুড়ান্ত বহিস্কারের জন্য পুনরায় সরকারি ফজিলাতুননেসা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন মিলুকে প্রধান করে ৫ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি করে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলাহয়। এই তদন্তে দুর্নীতির প্রমান মেললে তাকে দশ কর্ম দিবসের মধ্যে চুড়ান্ত বহিস্বার করা হবে।
কলেজ শিক্ষকদেরকে দাস আর শিক্ষিকাদেরকে দাসী বানিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের খবর ভোলা নিউজকে কান্না জড়িত কন্ঠে বিবরন দিয়েছে ইলিশা ইসলামিয়া মডেল কলেজের শিক্ষকরা। তার বিস্তারিত আসছে ভোলা নিউজের সাথে থাকুন…