সিএমএইচে নিলে ‘স্কয়ারে যেতেন না’ শেখ হাসিনা

ডেস্ক: অনলাইন-ভোলানিউজ.কম,

বন্দী থাকা অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে যাওয়ার সুযোগ দিলে শেখ হাসিনা স্কয়ার হাসপাতালে যেতেন না বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতাল ভর্তির সুযোগ না দেয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে সোমবার প্রথম কর্মদিবসে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন কাদের।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত ৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে এনে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ১০ জুন তাকে আবার এখানে আনার উদ্যোগ নেয়া হলেও তিনি আর এখানে আসতে চাইছেন না। বলেছেন, নিতে হবে বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে। এরপর সরকার তাকে সিএমএইচে নেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তাতেও রাজি নন তিনি।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল এবং সিএমএইচ ‘নরমাল’ হাসপাতাল। এখানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্ভব নয়।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দী অবস্থায় সরকারি খবরে বেসরকারি হাসপাতালে নেয়ার সুযোগ নেই। বিএনপি নেতারা পাল্টা যুক্তি দেখিয়ে শেখ হাসিনার বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার উদাহরণ টেনেছেন।

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হলে তিনি স্কয়ারে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।

বিএনপি নেতাদের এই যুক্তির বিষয়ে কাদেরের কাছে প্রশ্ন রাখেন একজন সাংবাদিক। জবাবে তিনি বলেন, ‘তখন যদি আমাদের নেত্রীকে সিএমএইচে অ্যালাউ করা হতো, তাহলে তিনি স্কয়ারে যেতেন না। এটা হলো সত্য। আমাদের নেত্রীর চিকিৎসা সিএমএইচে যদি করার সুযোগ থাকত, তাহলে তিনি স্কয়ারে কেন যাবেন? বলুন।’

খালেদার চিকিৎসা নয়বিএনপি ব্যস্ত ইস্যুর খোঁজে

বিএনপি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত নয় বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বলেন,  এ কারণেই সিএমএইচের প্রস্তাব তারা ফিরিয়ে দিয়েছে।

‘তারা বেগম জিয়াকে কেন্দ্র করে, তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে রাজনীতি করছেন। যেখানে সিএমএইচে সরকার তার সুচিকিৎসার কথা বলেছে, সেটাকে তারা ডিনাই করার অর্থ হচ্ছে, চিকিৎসার বিষয়ে যত না আগ্রহী, তার চেয়ে বেশি আগ্রহী তারা যে ঈদের পর আন্দোলন করবে সর্বাত্মক, তার ইস্যু খোঁজার জন্য। এতেই তাদের বেশি মাথাব্যাথা, তারা বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।’

বাংলাদেশে চিকিৎসার জন্য সিএমএইচেই সবচেয়ে আধুনিক ব্যবস্থা আছে দাবি করে কাদের বলেন, ‘সামরিক পরিবারের একজন (খালেদা জিয়া) কেন ট্রিটমেন্ট নিতে সংশয়ে আছেন? কেন তার এখানে শঙ্কা, কেন সিএমএইচ নয়?’

এই বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা আরও প্রশ্ন করতে চাইলে তাদেরকে থামিয়ে দেন কাদের। বলেন, ‘এই বিষয়টা একটা পার্টিকুলার মিনিস্ট্রি-জেল অথোরিটি আছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, আইন মন্ত্রণালয় আছে, তারা আপনাদের সাথে কথা বলেছেন, তারপরও আমি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি, সরকারের একজন মন্ত্রী। এই বিষয়টি নিয়ে আমার কথা বলার আছে। কিন্তু বারবার এই বিষয়টি নিয়ে আমার কথা বলা সমীচিন নয়।’

নেতারা প্রতিদিন দেখা করবেন নাকি?’

ঈদের দিন বিএনপি নেতারা কারাগারে গিয়ে কাদের নেত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে ফিরে এসেছেন। এ জন্য তারা সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন।

এই বিষয়টি নিয়েও কাদেরের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতারা কি প্রতিদিন দেখা করবেন? আত্মীয় স্বজন যখনই চেয়েছে তখনই দেখা করতে পেরেছে। আত্মীয় স্বজনরাই তো মূল।’

নিজে কারাবন্দী থাকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘জেলখানায় আমরা যখন ছিলাম আত্মীয়রাই দেখা করেছে। দলীয়দের দেখা করার কোনো সুযোগ জেলখানায় নেই। কিন্তু তারপরও তিনি একজন বড় নেত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তাকে তার দলের লোকজনের সঙ্গে, তার আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে কোনো প্রকার বাধা ছিল না।’

‘কিন্তু তারা (বিএনপির নেতারা) প্রতিদিন আত্মীয়দের মতো দেখা করতে আসবেন, জেলখানায় তো এই সুযোগ নেই।’

‘এটা জেলখানা। এটা কারও বাসভবন নয়’-বিএনপি নেতাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন কাদের।

 ‘এত স্বস্তিদায়ক’ ঈদযাত্রা ভাবেননি কাদের

এবার ঈদের আগে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা অন্যান্য বছরের চেয়ে স্বস্তিদায়ক ছিল দাবি করে সড়ক মন্ত্রী বলেন, ব্যবস্থাপনা এত ভালো হবে, তিনি নিজেও সেটা বুঝতে পারেননি।

 

মন্ত্রী বলেন, ‘সব কিছু মিলিয়ে এবার স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা, সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছে।’

‘আমি চিটাগাংযে চার ঘণ্টায় গেছি। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার জন্য। এবং কয়েকটা কাগজ মন্তব্য করেছে যে, বেটার দ্যান বিফোর এবং বেটার প্রিপারেশনস। প্রস্তুতিটা আসলে ভালো ছিল এবং বেটার ম্যানেজমেন্ট ছিল। এবার সত্যিই বেটার ম্যানেজমেন্ট আমরা করতে পেরেছি।’

এবার ঈদের যাত্রাটা অনেক আশঙ্কা, অনেক আতঙ্ক ছিল জানিয়ে কাদের বলেন, ‘এর মধ্যে এতগেুলো দৈব দুর্বিপাক এবং দুরোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও যাত্রা এতটা স্বস্তিদায়ক হবে, এটা আমি নিজেও ভাবতে পারিনি।’

এবার দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু হারও অনেক কম হয়েছে বলে জানান সড়ক মন্ত্রী। বলেন, ‘আগে একশ, দেড়শ, দুইশ-এবার সে তুলনায় কম হয়েছে, ৬০-৬৫, এ রকম নানাভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি।’

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ১৮জুন-২০১৮ইং)

SHARE