ভোলায় মায়ের মাদক কারবারিতে ছেলের শিক্ষা প্রদ্বীপ বিপন্নের পথে!

 

ষ্টাফ রিপোর্টার !! ভোলায় এক মাদক কারবারী মায়ের কারনে বাবাহারা একমাত্র ছেলের শিক্ষা জীবন বিপন্নের উপক্রম হয়েছে। সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইয়াবাসহ ওই নারী ডিবি পুলিশ হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন কারাভোগ করছেন। মানছুরা বেগম নামের ভোলা পৌরসভাধীন ৫ নং ওয়ার্ডস্থ সিকদার বাড়ীর ওই নারী তার তৃতীয় স্বামী মারুফসহ সে এখন জেলযাপন করছেন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,মানছুরা বেগমের প্রথম স্বামী মো: নুরে আলম ২০২০ সালে আকস্মিক মৃত্যুর পর সে এমরান নামের এক যুবকের সাথে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন। কিছুদিন সংসার করার পর স্বামী এমরানের সাথে স্ত্রী মানছুরার ডিভোর্স হয়ে যায়। প্রথম স্বামী নুরে আলমের ঘরে রাসেদ নামের এক পুত্র সন্তান রেখেই আলম মৃত্যুবরন করেন। মোটাদাগের অর্থ-বিত্ত্ব রেখে স্বামী নুরে আলমের মৃত্যুর পর তার পুত্র রাসেদ নাবালক থাকায় স্ত্রী মানছুরা কোর্টের মাধ্যমে ছেলের অভিভাবকত্ত্বের দায়িত্ব গ্রহন করেন। স্বামীর সম্পদের ভাগ হিসেবে স্ত্রী মানছুরা প্রায় অর্ধকোটি এবং ছেলের ভাগের চল্লিশ লাখ টাকা বুঝে নেন। বিপুল পরিমান অর্থকড়ির মালিক হয়ে মানছুরা বেগম লালমোহ উপজেলার ১১নং পৌর বালুর চর নামক এলাকার বাসিন্দা মৃত হাজী সুলতান আহমেদ মিয়ার পুত্র মারুফ হোসেনকে বিয়ে করেন। তথ্যসূত্রমতে,উক্ত মারুফ একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি হিসেবে বহুবার জেল খেটেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় তার বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মাদকের মামলা রয়েছে। এই মাদক কারবারি মারুফের সাথে বিয়ের পর তার প্ররোচনায় স্ত্রী মানছুরা তার প্রথম স্বামীর টাকা ও ছেলের গচ্ছিতসহ প্রায় কোটি টাকা পুঁজি নিয়ে মাদক কারবারীতে নেমে পড়েন। এভাবে বেশ কিছুদিন ইয়াবার কারবার করাকালীন বিগত ৩০ মে/২০২৪ ইং ১৮০ পিচ ইয়াবাসহ মারুফ ও মানছুরা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। জেলার ডিবি পুলিশের ইনচার্জ এনায়েত হোসেন সংবাদিকদের জানান, ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মাহিদুজ্জামান বিপিএম-সেবা এর দিকনির্দেশনায়,জেলা গোয়েন্দা শাখা,ভোলার তত্ত্বাবধানে, সদর মডেল থানাধীন ধনিয়া ইউনিয়নের ০৫ নং ওয়ার্ডস্থ দড়িরাম শংকর জনৈক মোঃ হেজু শনি এর বন্ধ চায়ের দোকানের সামনে ভোলা টু তুলাতলী রাস্তার উপর হতে ১৮০ (একশত আশি) পিচ অবৈধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট সহ মানছুরা ও মাটুফ নামে দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে ডিবি পুলিশের একটি টিম। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ ঘটিকায় সময় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ভোলা এসআই (নিঃ) মোঃ আসাদুজ্জামান খান, সংগীয় অফিসার ও ফোর্স সহ মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করেন। আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা রুজু হয়েছে। বর্তমানে এরা দু’জন কারাগারে আছেন। এদিকে মানছুরা বেগমের স্কুল পড়ুয়া ছেলে রাসেদ গণমাধ্যমকে জানান,কোর্টের মাধ্যমে অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে তার মা এখন মাদক কারবারিতে আসক্ত হয়ে পড়ায় তার পড়াশোনা করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মায়ের কাছে তার গচ্ছিত টাকার কানাকড়িও রাসেদের জন্য দেয়া হচ্ছেনা। ফলে রাসেদ স্কুলের বেতন,টিউশন ফি দিতে পারছেনা। নাস্তা,কলম-খাতা এমনকি জামাকাপড়ও কিনতে পারছেনা। ভোলা টাউন বাংলা স্কুলের নবম শ্রেনীর ছাত্র রাসেদ বলেন, আমার মা মাদক কারবারী এটা আমি মেনে নিতে পারছিনা। মায়ের অপকর্ম নিয়ে বন্ধুরা আমাকে উপহাস করায় বাহিরে বেরুতে ও সমাজের কাউকে মূখ দেখাতে পারছিনা। রাসেদ আক্ষেপ করে বলেন,মায়ের অবজ্ঞা অবহেলা ও মাদক কারবারের বিষাক্ত ছোবলে হয়তো আমার লেখাপড়ার প্রদ্বীপ নিভে যাবে। আজ বাবা বেঁচে থাকলে আমার এতো কষ্ট পোহাতে হতোনা। রাসেদের দাদা বৃদ্ধ সাদেক মিায়া এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার নাতি এখন আমার বাড়ীর আমার তত্ত্বাবধানে আছে। যতদিন বেঁচে আছি নাতির সকল ভরনপোষণ দেয়ার দায়িত্ব আমি নিয়েছি। ওদিকে বিপদগামী মায়ের অবহেলা ও পিতৃহারা রাসেদ সাংবাদিকদের কাছে পেয়ে বলেন,চাচ্চু আপনারা কোর্টের জজ স্যারকে বলে আমার অভিভাবকের দায়িত্বটা আমার দাদাকে দিন,নইলে আমার মা আমার টাকা সম্পদ দিয়ে মাদক কারবারী করবে। আপনারা আমাকে বাঁচান।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE