টিপু সুলতান।।
ঈদকে সামনে রেখে ভোলায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট । তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার গরু-ছাগলের দাম অনেক বেশি।
পশুর দাম নাগালের বাইরে থাকায় হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছে অনেক ক্রেতা। তবে এ বছর ভারতীয় গরুর স্থান মেলেনি হাটগুলোতে।
তারপরেও দাম চড়া থাকায় বাজেটের বাইরে যেতে যাচ্ছেন না ক্রেতারা। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এবার এককভাবে কোরবানি দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
ক্রেতারা জানান, দুইদিন পরেই ঈদ। তাই গরু কেনা চাই সবার। ঈদকে সামনে রেখে ভোলার কোনবানির হাট-বাজারগুলোতে প্রচুর পরিমানে গরু-ছাগল পাওয়া যাচ্ছে। সর্বত্রই ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
ভোলার বেশ কয়েকটি গরুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারা পশুকে বিভিন্ন রঙ ও ঢঙ্গে সাজিয়ে বাজারে এনেছেন। কিন্তু গরুর হাটে এসে ক্রেতারা পড়ছেন বিপাকে। পশুর মূল্য এতোটাই চড়া যা বিগত বছরের দাম ছাড়িয়ে গেছে।
চেওয়া খালীর গরু বিক্রেতা আল-আমীন জানান, গরুর দাম একটু বেশি। পশুর খাদ্য ও পরিবহন খচর বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তা না হলে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
চাকুরিজীবী আরিফুল ইসলাম , ব্যবসায়ী ইলিয়াছ ও বেল্লালসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সবাই চায় গরু কোরবানি দিতে। কিন্তু গরুর দাম চড়া থাকায় অনেক ক্রেতাই ছাগলের হাটে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানেও দাম চড়া। ফলে হচ্ছে না কেনা-বেচা।
পশুর মূল্য বেশি থাকার এ অবস্থায় যেমনি হতাশায় ভুগছেন বিক্রেতারা ঠিক তেমনি ক্রেতারাও। তবে বরাবরই একটু বিত্ত শ্রেণীর লোকজন চড়া মূল্যে গরু-ছাগল কিনছেন।
সামীম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘গরুর দাম আকাশ চুম্বি, ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই অনেক ক্রেতা খালি হাতে যাচ্ছেন। গরু কিনতে এসে অনেক ত্রেতাই হতবাক হচ্ছেন।’
সুত্রে জানা যায়, প্রতিবছরই এ সময় জমে ওঠে ভোলার পশুরহাট। তবে পরানগঞ্জ, ভোলার হাট, ইলিশার হাট,চেওয়াখালীর মোস্তফা চেয়ারম্যান বাড়ির সংলগ্ন হাট, বাংলা বাজার, ঘুইংগারহাট, কুঞ্জেরহাট, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিনের বিভিন্ন হাটে ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। সেখানেই ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছেন। এ সকল হাটগুলো সরগরম হয়ে ওঠলেও কেনাবেচা অনেক কম।
এদিকে, এবার সবচেয়ে বড় মূল্যের গরু উঠেছে ভোলার হাটে । দাম হাকানো হয়েছে ১৫ লাখ। তবে দামের চেয়ে মূল্য কম বলায় বিক্রি হচ্ছে না সেটিও।
গরুর মালিক সদর উপজেলা ভেলুমিয়া ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৫ লাখ টাকা পেলেই সেটি বিক্রি করবেন। এর কমে নয়।’
এনজিও কর্মী আমজাদ ও ব্যবসায়ী আকবর বলেন, ‘বিগত কোরবানির হাটে ভারতীয় পশু ওঠায় দাম ছিল কিছুটা নাগালের মধ্যে। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত কোন বাজারেই ভারতীয় গরু আসেনি। এরপরও গরুর দাম বেশি থাকায় ক্রেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।’
গরুর দাম চড়া এমন কথা স্বীকার করে চেওয়াখালীর হাটের ইজরাদার জহির তালুকদার জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেশি থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাজারগুলোতে কোন চাঁদাবাজি নেই।
অপরদিকে, আগামী হাটে আরো বেশি গরু বাজারে এলে গরুর দাম কমবে বলে মনে করছেন সাধারন ক্রেতারা।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান