অভিবাবকহীন ভোলায় অসহায় অভিবাবকদের আর্তনাদ

 

বিশেষ প্রতিনিধিঃ মনে হচ্ছে ভোলার মানুষ বিচারহীন আরাকান রাজ্য তথা কোন মগের মুল্লুকে বসবাস করছেন। ভোলার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক অভিবাবকদের বিপদে কাছে না পেয়ে ভোলার অসহায় বাবাদের আর্তনাদে জেলা শহরের আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে গেছে। ভোলায় অনুষ্ঠিত প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার হল থেকে আটক হওয়া অনেককে পরীক্ষার হল থেকেই মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হলেও ২২জনকে আটক করে থানা হাজতে রাখা হয়। এদের মধ্যে ১০ জন নারী ও ১২ জন পুরুষ রয়েছে। আটক হওয়ার ২৬ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি ভোলার প্রশাসন। অতপর ৩০ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পর তাদের বিষয়ে আইসিটি মামলা করে তাদের কোর্টে চালান করা হয়। থানা সূত্রে জানা গেছে, যে সকল কেন্দ্র থেকে এদের আটক করা হয়েছে ওই সকল কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ মামলার বাদী হতে চাচ্ছেন না। তাদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী কে হবেন সেই সিদ্ধান্ত না আসায় কোনো প্রকার ব্যবস্থা নিতে এতো বিলম্ব হয়েছে।প্রাইমারি নিয়োগ পরিক্ষার ৩০ টি পরিক্ষা কেন্দ্র থেকে মোবাইল রাখার একই অপরাধে ৬২ জনকে আটক করা হলেও তাদেরকে পরিক্ষা থেকে বহিস্কার করে মুচলেকা নিয়ে ৪০ জনকে ছেড়ে দিয়েছে ভোলা সরকারি ফজিলাতুন নেসা মহিলা কলেজ কেন্দ্র সহ বাকি কেন্দ্র গুলো থেকে। কিন্তু কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ২২ জনকে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় আনার পরেই এই পরিক্ষার্থীদের সহিত ভয় ভীতিসহ নানা প্রকারের নাটকিয়তা শুরু করেন ভোলার দায়িত্বহীন প্রশাসন। এতে আটক থাকা সদ্য সন্তান প্রসব করা কয়েকজন পরিক্ষার্থী দফায় দফায় অসুস্থ হয়ে পরলে তাদের আবার হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেন ওনি শাহিন ফকির। অবশেষে আটক ১২ জনের উপর দন্ডাদেশ দেয়ার নিমিত্তে বাদী যোগার করতে না পারা ভোলার প্রথমিক শিক্ষা অফিসার নিজেই নেমে আসেন রাস্তায়। মামলার ধারা না মিলাইতে পেরে অবশেষে সেই চির পরিচিত আইসিটি মামলাকেই হাতিয়ার হিসেবে বেচেনেন ওই কর্তা ব্যাক্তি। কিন্তু ধারার মারপ্যাচে জামিন যোগ্য ধারায় অভিযোগ হওয়ায় ভোলার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত একজনকে জামিনও মঞ্জুর করেন। এই জামিন মঞ্জুরের ঘটনায় কষ্ট পান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তিনি বাকিদের জামিন বন্ধ করতে অপ-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আসামীদের রিমান্ড চান। আজ আদালত জামিন শুনানীর দিন আসামীদের রিমান্ডের শুনানীর দিন ধার্য করেছেন। ভুক্ত ভুগিদের অভিবাবকরা বলেন, আমাদের সন্তানরা পাবলিক পরিক্ষায় পাস করে যোগ্যতা অর্জন করে নিয়োগ পরিক্ষা দিতে আসছে। সেখানে তাদের ধরে এক একজনের ব্যাপারে এক এক রকম হ-জ-ব-র-ল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে প্রশাসন। তার পরেও যখন আমরা কোর্টে ন্যায় বিচার পাচ্ছিলাম তখন বিচারকে প্রলম্বিত করার উদ্দেশ্যে পুলিশ ফের অযৌক্তিক রিমান্ড চেয়েছে। আমি ভোলার পুলিশের এই অমানবিক সদ্ধান্তে হতাস। আসলে আমাদের ভোলার রাজনৈতিক অভিবাবকরা ও প্রশাসনিক অভিবাবকরা বিষয়টি নিয়ে সময়োপযোগি সিদ্ধান্ত নিতে পুরপুরি ব্যার্থ হয়েছেন। মনে হচ্ছে তারা আমাদের অভিবাবক না হয়ে দন্ড বাবক হয়ে দাড়িয়েছেন।

(ফাইল ছবি)

SHARE