মনিরুল ইসলাম।। এলাহি কান্ড ভোলার সিঙ্গাপুর শ’ তিনেক ভিভিআইপি ক্লিনিক দেখে তো আনন্দে আত্নহারা ক্ষতির মা। ২ ঘন্টায় ২০ এর অধিক রিপোর্ট চলে আসলো ক্ষতির মা’র। রিপোর্ট দেখেই পাতলি কোমরের আনকড়া সুন্দরি ডাক্তার বলে দিলো আপনার রগের মইধ্যে পোক অইছে। আপনাকে বিকেলের মধ্যই সিজার করতে হবে। ক্ষতির মাতো অবাক আর হতাশও বিকালের মধ্যে কেমনে কি? মঙ্গার বঙ্গ থেকেতো তার সন্তানদের আসতে সময় দিতে হবে। যথারিতি দেশের বাড়িতে ক্ষতির মা’র ফোন। ফোন পেয়ে সিঙ্গাপুরের ভোলা মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো ক্ষতি। অসুস্থ মা আর সিঙ্গাপুরের ভোলা দেখতে তো আর তরই সইছেনা সদ্য এইচএসসি পাস করা ক্ষতি’র। ক্ষতি অতিদ্রুত ভোলায় আসতে গুগল বাবাজির সাহায্য নিলো। সার্চ করে জানতে চাইলো ভোলায় দ্রুত যাওয়ার উপায়। দেখলো ভোলায় বিমান বন্দরের কাজ চলায় এখনো বিমান চলাচল শুরু হয়নি। তবে নতুন উদ্বোধন হওয়া পদ্মা সেতু ও ভোলা-বরিশাল ব্রিজের যানজটের কারনে প্রায় ৯ ঘন্টার বেশি সময় লেগে যায় নয়া সিঙ্গাপুরে আসতে। তব এখনো ইলিশা দিয়ে ৫ ঘন্টাই ঢেউ লেগে ব্লক ভেঙ্গে যাওয়া গ্রীনলাইনেই দ্রুত ভোলায় আসা সম্ভব। তাই সব কিছু বাদ দিয়ে হ্যামকে চড়েই ভোলায় রওয়ানা দিয়ে দিলেন ক্ষতির মা’র মেয়ে ক্ষতি। বুড়ি গঙ্গা নদীর মনমাতানো অন্তর টানা সুগন্ধী ঘ্রাণ পার হওয়ার পরেই নদী প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য ক্ষতি গ্রীণ লাইনের পিছনের দিকে এসে দেখতে পেল; মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুরের বালুকাটার কয়েক’শ ড্রেজার মেশিন ভোলার মেঘনার তলদেশ দেখতে মিছিল সহকারে রওয়ানা দিয়েছে। ক্ষতি ভোলায় কাজ করা একজন প্যান্ট পড়া অফিসার এর কাছ থেকে এ ব্যাপারটি জানলো। প্যান্ট পরা ওই অফিসার ক্ষতিকে আরো জানালো গ্যাসের উপর ভাসছে ভোলা তাই কুপ খননের দরকার কি? মেঘনার তলদেশ বালু খেকোরা খেয়ে ফেললে সেই ফুটায় ফাইপ ডুকাইয়া গ্যাস উত্তোলনের জন্যই এমন আয়োজন করেছেন বলেও জানান ওই প্যান্ট পড়া কর্তা বাবু। ক্ষতি এই কথা গুলো ভালো করে না বুঝায় এই আলোচনা করতে বেশি আগ্রহী না হওয়ায় বললো আপনার অফিসে এসে দেখা করে এসব আরো বিস্তারিত শুনবো। সুন্দরি টিনেজ ক্ষতির মুখে এমন কথা শুনেতো ভিসি অফিসের ওই অফিসারের পুরো শরিরে শুরশুরি এসে গেলো। ভাবলো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। এতেই বলে উঠলো তোমার নাম্বারটা দাও আমি গাড়ি পাঠিয়ে তোমাকে আমার অফিসের পিয়ন দিয়ে অফিসে নিয়ে আসবো। কথা বলতে বলতে দ্রুত গতির হ্যামক সিঙ্গাপুরের বন্দর নগরী ইলিশা ঘাটে চলে আসলো। ক্ষতিও দ্রুত নেমে পড়লো ভোলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার অসুস্থ মা এর কাছে যাওয়ার জন্য। ক্ষতি মেডিকেল কলেজে এসে মা এর মুখে গুরুত্বর অসুখের নাম শুনে, তা বুঝতে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে আসামাত্রই ডাক্তার তার কোন কথা না শুনে ই তাকে কত গুলো টেস্ট করাতে প্রেসক্রপিশন ধরিয়ে দেয়ার সাথে সাথে মেডিকেল কলেজে ওৎ পেতে থাকা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক ল্যাবের অতিমাত্রার সেবকরা ক্ষতিকে ধরে নিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে আর্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট সহ এক গাদা রিপোর্ট নিয় ডাক্তার অক্ষর সাহেবের কাছে ফেরত নিয়ে আসেন। ডাক্তার কালবিলম্ব না করে সাথে সাথেই বললো, ভোলা মেডিকেল কলেজের ওটি উদ্বোধন মন্ত্রীর অভাবে এখনো উদ্বোধন হয়নি। তাই দ্রুত ওকে ক্লিনিকে ঢুকাও, সন্তানের মাথা উল্টা, পেট কেটে ঠিক করতে হবে। ক্ষতি তার এখনো বিয়ে হয়নি বলতে গিয়েও বলতে পারেনি সিঙ্গাপুরের ডাক্তারদের হাইস্পিডি সেবার তোড়ে। অতি কষ্টে জোড় করে বলে উঠলো আমি আমার মা এর অসুস্থতার খবর নিতে এখানে এসেছি। আমার পেট পরে কাইটেন আগে বলেন, আমার মা এর কি হইছে? ডাক্তার অক্ষর হকচকিয়ে বললো- তোমার মা আবার কে? এরপর মা এর কথা বলার সাথে সাথেই ভোলা ডিজিটাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কম্পিউটারের জায়ান্ট স্ক্রিনে ক্ষতির মা এর ছবি ভেসে উঠলো আর পাতলি কোমড়ের সুন্দরি আনকোড়া ডাক্তার রা বলে উঠলো আপনার মায়ের তো রগের মধ্যে পোঁক হইছে। আমরা তো আপনার অপেক্ষায় ছিলাম। আপনি একটা সই করুণ, এখনি সিজার করবো। ক্ষতিতো সিঙ্গাপুরের ডাক্তারদের মুখে উদ্ভুদ এই রোগের নাম শুনে অবাক? ভাবলো কিছুক্ষণ আগে আমার পেট কাটতে চাওয়ার মত নয়তো!! তাই ক্ষতি কি করবে ভাবতে শুরু করলো; কার কাছে যাবেন ভোলায় তো কোন পরিচিত মানুষই নেই তার। এমন সময় মনে পরলো গ্রীনলাইনে নাম্বার নেয়া সেই প্যান্ট পরা কর্তা বাবুর কথা। যথারিতি কর্তাবাবুরে ক্ষতির ফোন। কর্তাবাবু তো খালি বাসায় ক্ষতির ফোন পেয়ে পুলকিত। চলবে……..