১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু, রাজধানীতে ফিরতে ভোগান্তি

 

 

নিউজ ডেস্কঃ করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ৮ দিনের বিরতির পর রাজধানীসহ সারা দেশে ফের শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। আজ সকাল ৬টা থেকে এই বিধিনিষেধ শুরু হয়। চলবে আগামী ৫ই আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। রাজধানীতে রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ সব ধরনের দোকানপাট, শপিংমল, সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা বন্ধ রয়েছে। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য গত ১৫ই জুলাই থেকে বিধিনিষেধ ৮ দিন শিথিল করেছিল সরকার। তবে ঈদ উদযাপন করতে যারা গ্রামে গিয়েছিলেন তাদের রাজধানীতে ফিরতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।আজ সকালে রাজধানীর বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে নেমেই দুর্ভোগে পড়েন তারা। গণপরিবহন না পেয়ে দীর্ঘপথ পায়ে হেটে গন্তব্যে পৌঁছেন তারা। অনেককে ভারী ব্যাগ কাঁধে করে দীর্ঘপথ হাঁটতে দেখা গেছে।  বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী সাব্বির (৩০) জানান, তিনি আজ  ভোরে বরিশাল থেকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নামেন। কিন্তু রাস্তায় কোন গণপরিবহন পাননি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার বাধ্য হয়ে দুই ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে হেঁটে রামপুরা আসেন।  চারজনের পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সায়েদাবাদ আসেন রফিক (৪০)। সকালে বাস টার্মিনালে নামার পর দেখে কোন ধরনের গণপরিবহন নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হেঁটেই মালিবাগ আসেন। একই দৃশ্য দেখা গেছে গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনালে।  বেশির ভাগ মানুষ দীর্ঘপথ হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন।

বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, এই বিধিনিষেধ হবে ‘সবচেয়ে কঠোরতম’। বিধিনিষেধ চলাকালে ‘অতি জরুরি’ প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাঠে আছে সেনাবাহিনী। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগের বিধিনিষেধের মতোই এবারের বিধিনিষেধে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস; সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন; অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। দাপ্তরিক কাজ ভার্চ্যুয়ালি সম্পন্ন করবেন। শপিং মল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট, সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। বিধিনিষেধে সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে। আগের বিধিনিষেধের সময় শিল্পকারখানা খোলা ছিল। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন, কৃষিপণ্য-উপকরণ, খাদ্যশস্য-খাদ্যদ্রব্য পরিবহন বা বিক্রি, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইনে কেনা বা খাবার নিয়ে যাওয়া) করতে পারবে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে। বিদেশগামী যাত্রীরা তাঁদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট বা প্রমাণ দেখিয়ে গাড়িতে যাতায়াত করতে পারবেন।মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঘোষণায় বলা হয়, বিধিনিষেধ চলাকালে ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। যা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে।

SHARE