চরফ্যাশনে যৌতুকের দাবীতে বসুন্ধরা ডিলার নুরে আলম কতৃক স্ত্রী নির্যাতন

মাসুদ রানা ভোলা জেলা দক্ষিণ প্রতিনিধিঃভোলার চরফ্যাশনে যৌতুকের জন্য স্বামী, শাশুড় ও ননদের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১ সন্তানের জননী বিবি কুলসুম। স্বামীর লোকজন ভিকটিমকে চরফ্যাশনে চিকিৎসা নিতে বাধা দেওয়ায় তাকে বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে চরফ্যাশন থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। এর আগেও একাধিকবার অসহায় ওই গৃহবধূর ওপর নির্যাতন করেন তার স্বামী বসুন্ধরা খাদ্য সামগ্রীর চরফ্যাশন এলাকার ডিলার নুরে আলম, শশুড় হাবিবউল্লাহ ও ননদ লিয়া অভিযো পাওয়া গেছে।
ভিক্টম বিবি কুলসুম জানান, চরফ্যাশন পৌরসভা ৯ নং ওয়ার্ডের আলী মিয়া পন্ডিত বাড়ীর হাবিব উল্লাহর ছেলে নুরে আলমের সাথে ২০১৩ ইং সালের ১১ আগষ্ট ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক ৪ লক্ষ টাকা দেন মোহরানায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাশিগঞ্জের কুড়ালিয়া গ্রামের মৃত আমির হোসেন এর মেয়ে বিবি কুলসুমের বিবাহ্ হয়। বিয়ের পর থেকে নুরে আলম ব্যবসা করার কথা বলে যৌতুক দাবি করে আসছিল। তাই মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পিতৃহীন কুলসুমের ওয়ারিশ সুত্রে পাওয়া জমি বিক্রি করে মা নুরতাজ বেগম জামাতা নুরে আলমকে নগদ ৬ লক্ষ টাকা ও মোটর সাইকেল কিনার জন্য আরো ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সহ মোট সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা ও আসবাবপত্র দেন। কিন্তু এতেও মন ভরেনি তার। আরও টাকার জন্য কারণে-অকারণে সে নির্যাতন করতে থাকে স্ত্রীর ওপর। তাদের ঘরে ৭ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে কুলসুম পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা যায় কুলসুমের গর্ভে দুই জমজ সন্তান রয়েছে। যৌতুকলোভী পাষণ্ড নুরে আলম তার স্ত্রীর গর্ভে সন্তান সম্ভবা হওয়ার খবরে খুশি না হয়ে বরং বিভিন্নভাবে সন্তান নষ্ট করার জন্য পায়তারা চালায়। পরবর্তীতে বরিশালের একটি হাসপাতালে চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে কুলসুমের গর্ভের যমজ সন্তান নষ্ট করে পাষণ্ড নুরে আলম। সর্বশেষ বুধবার (৩০ জুন) কুলসুম তার বাবার বাসা থেকে চরফ্যাশন পৌরসভা ৪ নং ওয়ার্ডের কাঁচা বাজার এলাকায় নুরে আলমের ভাড়া বাসায় যাওয়ার পর সকাল ১১ ঘটিকায় শশুড় হাবিবউল্লাহ, ননদ লিয়া ও স্বামী নুরে আলম ব্যবসার কথা বলে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। এতে কুলসুম অস্বীকৃতি জানালে শশুড়, ননদ ও স্বামী মিলে গৃহবধূ কুলসুমের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে কুলসুম ৯৯৯ ফোন করলে চরফ্যাশন থানা পুলিশ এসে গৃহবধূকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ অভিযুক্ত শশুড়, ননদ ও স্বামীকে থানায় নেওয়ার পর নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ কুলসুম থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরও অজ্ঞাত কারণে তাদেরকে ছেড়ে দেয় চরফ্যাশন থানা পুলিশ। থানা থেকে তারা ছাড়া পেয়ে গৃহবধূ কুলসুমকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিলে ভয়ে নিরুপায় হয়ে রাতে চরফ্যাশন থেকে এসে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় বিবি কুলসুম।ওই ঘটনায় অভিযুক্ত নুরে আলম জানান, আমি কোন যৌতুক নেইনি। আমার স্ত্রী আমাকে দুই বার হত্যা করতে চেয়েছিলো তাই তাকে ১ মাস পূর্বে তালাক দিয়েছি। এবিষয়ে চরফ্যাশন থানা (ওসি) মনির হোসেন জানান, ৯৯৯ কল রেসপন্স করে থানায় স্বামী স্ত্রী উভয়কে নিয়ে আসা হয়েছে। কিছুদিন পূর্বে স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার প্রমান উপস্থাপন ও মারপিটের ঘটনা প্রমানিত না হওয়ায় আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি।

SHARE