চরমোনাই মাহফিলের আখেরি মোনাজাত সম্পন্ন

 

 

 

আরিয়ান আরিফঃমুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই-এর উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ৩দিন ব্যাপী ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি বাদ ফজর আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়। মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই-এর পরিচালনায় আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।মোনাজাতের আগে শেষ বয়ানে পীর সাহেব বলেন, পরিপূর্ণ ও সহি-শুদ্ধভাবে নামাজের জন্য কেরাত শিক্ষা করা ফরজ। যারা আত্মাকে পবিত্র করবে তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।ইমানের ওপর পরিপূর্ণভাবে মজবুত থাকার নির্দেশনা দিয়ে সৈয়দ মো. রেজাউল বলেন, আল্লাহ পাকের জিকির অধিক করলে কলবের ময়লা দূর হয়। কল্ব পরিষ্কার হওয়ার একমাত্র পথ জিকির।মুসুল্লিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা চরমোনাই এসেছেন তারা সবাই নির্দেশ মেনে চলবেন, অন্যথায় চরমোনাই আসার দরকার নাই। আমরা পীর-মুরিদির ব্যবসা করি না তিনি বলেন, আমরা সবাই কবর পথের যাত্রী, যার ভিতরে তাকাব্বরি থাকবে সে বেহেশতের ঘ্রাণও পাবে না। হিংসা, অহংকার, গিবত, মিথ্যা, সুদ, ঘুষসহ সব গুণাহের কাজ হতে দূর করতে হবে। হারাম মালের দ্বারা যে রক্ত ও শরীর তৈরি হবে তার স্থান হবে জাহান্নাম। কবর আজাব ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত নামাজ আদায় করা ও চরমোনাই এর তরিকার পাঁচ ওষুধ পালনসহ শরিয়তের যাবতীয় হুকুম আহকাম মেনে চলতে হবে।তিনি আরো বলেন, কুরআন হাদিসের উদ্বৃতি দিয়ে জাহান্নামের ভয়াবহতা বর্ননা করেন এবং জান্নাতের নেয়ামতের বিবরণ দেন। জাহান্নামের ভয়াবহতার বর্ননা শুনে মাহফিলে আসা মুসুল্লিরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বেশি বেশি মৃত্যুর কথা স্মরণ করে দুনিয়ার লোভ লালসা ত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিতে সকল কাজকর্ম করার উপদেশ দেন। আখেরি মুনাজাতে পীর সাহেব বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করেন এবং সকলকে ইসলামের ছায়াতলে আসার আহবান জানান। চরমোনাই মাহফিলে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় এক কোটি লোক অংশগ্রহণ করেছেন। চরমোনাইতে বৎসরে দুটি মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, ব্যাপক লোক সমাগমের পাশাপাশি রেকর্ড সংখ্যক উলামায়ে কেরামের উপস্থিতি ছিলো এবারের মাহফিলে।এরমধ্যে এই বারের ফাল্গুনের মাহফিলটি ব্যাপক পরিসরে হয়ে থাকে। চলতি বছর চরমোনাই এলাকায় ৫টি মাঠজুড়ে মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। যার আয়তন হচ্ছে ৩০০ একর অর্থাৎ প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা। এরপরও লোক সংকুলান হচ্ছে না। জানা গেছে, আগত মুসল্লিগণ জায়গা না পেয়ে আশেপাশে বাড়ির আঙ্গিনায় ও জঙ্গল ঝোপঝাড়ে তাবু গেড়ে অবস্থান নিচ্ছেন। মোনাজাত শেষে আগত মুসুল্লিরা শত শত বাস, লঞ্চ ও ট্রলার যোগে নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। নদীর বিস্তৃর্ণ এলাকা, মাঠের আশপাশের বাগান, ঘড়বাড়ির আঙিনাসহ সবখানে বিপুলসংখ্যক মুসল্লিদের উপস্থিতিতে তিল ধারণে ঠাঁই ছিল না। মাহফিলে আগত মুসুল্লিদের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়। জানাজা শেষে তাদের কফিন নিজ নিজ ঠিকানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি।মাহফিলে হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মুফতী সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম, মুফতী সৈয়দ এছহাক মো. আবুল খায়ের, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী, মুফতী আমিনী রহ. এর সাহেবজাদা মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায় কেরাম, মাদরাসার মুহতামিম, শায়খুল হাদীস রাজনীতি ব্যক্তিবঙ্গ সাংবাদিক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী স্বেচ্ছাসেবক দল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর,ও বিভিন্ন উস্তাদবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

SHARE