টিপু সুলতান ।। ভোলার লালমোহন উপজেলার প্রতারক ও ভূমিদস্যু আবুল কালামের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পাঁচটি পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ভোলা শহরের কুইন আইসল্যান্ড কিচেন নামের একটি রেস্টুরেন্টের হল রুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের কিশোরগঞ্জ গ্রামের হারিছ আহমেদের ছেলে ভুক্তভোগী মো. মোস্তফা জানান, ২০১২ সালে একই এলাকার আবুল কালাম ২৬ শতাংশ জমি বিক্রির জন্য একটি স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে দুই লাখ টাকা নেয়। এর পর থেকে সে জমির দলিল ও দখল বুঝিয়ে না দিয়ে তলবাহানা শুরু করে। সর্বশেষ তার কাছে টাকা চাইতে গেলে সে উল্টো আমাকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান শালিশের মাধ্যমে টাকা দেয়ার কথা বললে সে উল্টো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়। এবং বিভিন্নভাবে আমাদেরকে হয়রানি করে। একই এলাকার মো. সিরাজের স্ত্রী ভুক্তভোগী রানু বিবি জানান, সে সরকারি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। হঠাৎ করে স্থানীয় আবুল কালাম তাকে এই জমিতে থাকতে হলে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিতে বলেন। সে আবুল কালামকে ২০ হাজার টাকা দেয়। বাকী টাকা না দেয়ায় রানু বিবিকে ওই জমি থেকে উঠে যেতে বলে আবুল কালাম। রানু বিবি জমি থেকে উঠে না যাওয়ায় তাকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করেন আবুল কালাম ও তার পরিবার। ওই এলাকার আব্দুল হাশেম ছেলে ভুক্তভোগী দাইমুদ্দিন জানান, লালমোহনের কিশোরগঞ্জ মৌজার তার পৈত্রিক ৪১ শতাংশ জমি দখলের জন্য ভূমিদস্যু আবুল কালম লোকজন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তার উপর হামলা করে তাকে আহত করে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার আদালতে মামলা করেও হেরে যায় আবুল কালাম। তারপরও আবুল কালাম তাকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আতংকে জীবনযাপন করছেন। স্থানীয় মো. এছহাকের ছেলে আব্দুস শহিদ জানান, তিনি ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের কিশোরগঞ্জ গ্রামে রাস্তার পাশের সরকারি জমিতে একটি দোকান উঠিয়ে ব্যবসা করছেন। কিন্তু স্থানীয় আবুল কালাম তাকে ওই জমি থেকে উঠে যেতে চাপ প্রয়োগ করেন। এমনকি সে কয়েকবার দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। এবং দোকান থেকে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে টাকা না দিয়ে চলে যায়। অপর ভুক্তভোগী একই এলাকার হারিছ বেপারীর ছেলে মো. শাহে জানান, আবুল কালাম তার কাছ থেকে ২০১৩ সালে তিন লাখ টাকাশ ২৬ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। কিন্তু ওই জমি এখনও বুঝ দেয়নি। তার কাছে জমি বুঝ চাইলে সে উল্টো তাকে মারধর করতে আসে। সে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বেড়ায়। এলাকার চেয়ারম্যাম তার এ সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে বলায় সে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অপবাদ দিতে থাকে। আমরা সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু আবুল কালমের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।এব্যাপারে অভিযুক্ত আবুল কালামকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, আবুল কালামকে এসকল ঘটনায় চেয়ারম্যান আটক করলে আমরা উদ্ধার করতে গিয়ে বিষয়গুলো জানতে পেরেছি। তবে আমাদের কাছে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।