ভোলায় ডিজেপার্টির নামে শব্দদূষণে অতিষ্ঠ জনজীবন, দ্রুত প্রতিকার জরুরি

 

 

আরিয়ান আরিফঃভোলায় ডিজেপার্টির নামে চলছে শব্দ দূষণ। দিনের পর দিন এর মাত্রা বেড়েই চলেছে। শীতকাল হওয়ায় চারদিকে চলছে কিশোরদের এই রঙ্গমেলা। প্রতিদিন এসব ডিজে পার্টির যন্ত্রণায় অস্থির সাধারণ জনগণ। এসবের কারণে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে কিশোর অপরাধ। গত বছর ধনিয়া ইউনিয়নের দড়িরাম শংকর গ্রামে সারারাত মাদক দ্রব্য গ্রহন করার ফলে সকালে এক যুবকের মৃত্যু হয়।মাঝে মাঝে ডিজেপার্টিকে কেন্দ্র করে কিশোরদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। তাই সাধারণ জনগণের চাওয়া এসব ডিজে পার্টি বন্ধ করা হোক। না হয় স্পিকার বাজানো নিষিদ্ধ করা হোক। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন, ভোলা সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোঃ এরশাদ। তিনি বলেন, এসব ডিজে পার্টির নামে শব্দদূষণ চলছে। রোগি ও বয়স্ক মানুষদের সবচেয়ে ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও নামাজে সময় শব্দের কারনে ঠিকমত নামাজ আদায় করা যায় না।আমার নিজেরও শব্দ দূষণের সমস্যা রয়েছে। এইসব ডিজে পার্টিগুলো সারারাত ধরে চলে কিশোরদের মাদক দ্রব্য সেবন করার আড্ডা কিশোর গ্যাং সৃষ্টি ও কিশোর অপরাধ বাড়ছে তাই এইসব ডিজে পার্টি বন্ধ করার দাবী জানাচ্ছি ।এ ব্যাপারে ভোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক গোলাম সরোওয়ার বলেন, ইদানীং লক্ষ করছি ডিজেপার্টির নামে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার কিংবা হাট-বাজারে রাস্তার পাশে ইচ্ছামতো উচ্চ স্বরে রাতে মাইক ও সাউন্ড বাজিয়ে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। রাতে-দিনে সমানতালে একাধিক মাইক, অনুষ্ঠানস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মাইক বাজিয়ে জনসাধারণের অসুবিধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। অসুস্থ্য ও বয়স্ক মানুষের জন্য এটি খুবই বিরক্তির কারণ। ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সাউন্ড সিস্টেম ও মাইক বাজিয়ে এলাকার মানুষের অসুবিধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। উচ্চ শব্দের ফলে পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।এই বিষয় ভোলা পৌরবাসী মীর মোস্তাফিজুর রহমান রনি বলেন, বিনোদনের নামে অতিরঞ্জিত কিছু হচ্ছে। মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম বাজাক, কিন্তু অতিমাত্রার শব্দ তো সমস্যা। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ ব্যাপারে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বিষয়টি নিয়ে ভোলা সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আরমান হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সাধারণ জনগণের সুবিধার্থে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শব্দদূষণের কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির দেখা দেয়। উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস, বধিরতা, হৃৎকম্প, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, আলসার, অনিদ্রা (ইনসমনিয়া), মানসিক উত্তেজনা ও উদ্বেগ (অ্যাংজাইটি), স্ট্রোক ও বিরক্তি সৃষ্টি হয়৷ এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু এবং বয়স্করা৷ শিশুদের লেখাপড়ায় মনোযোগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এমনকি গর্ভে থাকা সন্তানও শব্দদূষণে ক্ষতির শিকার হয়, অর্থাৎ তাদের শ্রবণশক্তি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। সেই সঙ্গে তাদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিও প্রভাবিত হয় । সচেতন মহল মনে করছে, গ্যাং কালচার বন্ধ করতে না পারলে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য মা বাবাকে এখনই সচেতন হতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে।

SHARE