পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালী খাবিখা প্রকল্পে হয়েছে হরিলুট। জেলার বাউফলে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির কাজ কাগজে কলমে দেখিয়ে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক যুবলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। প্রকল্পগুলো হলো দাসপাড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড খাজুরবাড়িয়া সুলতান সিকদার বাড়ি হতে লোকমান সিকদার বাড়ি অভিমুখ রাস্তা পুনঃনির্মাণ। বরাদ্দের পরিমান ৮ মেট্রিকটন চাল। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হলেন দাশপাড়া ইউনিয়নের যুবলীগকর্মী মো. আতিকুর রহমান। একই ওয়ার্ডে আরেকটি প্রকল্পের নাম বলরাম ধূপীর বাড়ি হতে আসমত আলী মুন্সির বাড়ির অভিমুখী রাস্তা পুনঃনির্মাণ। বরাদ্দের পরিমান ১৫ মেট্রিকটন গম। সড়কটিতে নাম মাত্র কাজ হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সিংহভাগ বরাদ্দ আত্মসাৎ হয়েছে। অন্যটি হলো দাসপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জোনাব আলী মৃধা বাড়ি হতে সাইড বেড়ি অভিমুখী রাস্তা পুনঃনির্মাণ। বরাদ্দের পরিমান ৯ মেট্রিকটন চাল। একই ওয়ার্ডের আরেকটি প্রকল্পের নাম কাজী বাড়ি হতে আনছার খলিফার বাড়ি অভিমুখী রাস্তা পুনঃনির্মাণ। বরাদ্দের পরিমান ১৫ মেট্রিকটন গম। এ প্রকল্পটিরও বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হলেন আতিকুর রহমান। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসা. সালমা মরিয়ম জানান, ওই নামে কোনো সড়ক নাই। আর সুলতান সিকদার ও লোকমান সিকদার নামে ওই ওয়ার্ডে কোনো ব্যক্তি নাই। এটি একটি ভুয়া প্রকল্প। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন পরিপত্রের বিধি লঙ্ঘন করে আতিকুর রহমান ওরফে মোহন নামে এক যুবলীগকর্মীকে তিনটি কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। অথচ কোনো অবস্থাতেই এক ব্যক্তি দুটির বেশি গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির প্রকল্প চেয়ারম্যান হতে পারবেন না। এ ঘটনায় দাসপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গীর হোসেন পটুয়াখালীর বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান, পিআইওসহ প্রকল্প কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে ১২ নভেম্বর মামলা করেছেন।
দাসপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,‘ ভুয়া প্রকল্পের নামে এবং একাধিক প্রকল্পের নামমাত্র কাজ করে বরাদ্দকৃত চাল ও গম আত্মসাৎ করা হয়েছ্।ে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপির সদস্যদরা রেজল্যুশেন করে আমাকে এ বিষয়ে মামলা করার জন্য অনুরোধ করেছেন। তাই তিনি মামলা করেছেন।’
যুবলীগকর্মী আতিকুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিককে বলেন,‘তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য না।কাজ করেই গম ও চাল উত্তোলন করেছেন।’ তিনি বরাদ্দের চেয়ে আরও বেশি পরিমান কাজ করেছেন বলেও দাবি করেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাজিব বিশ্বাস মুঠোফোনে সাংবাদিককে জানান,‘তবে কাজ না করে বরাদ্দকৃত চাল কিংবা গম আত্মসাৎ করার কোনো সুযোগ নাই। কাজ করার পরেই চাল কিংবা গম ছাড়করণ করা হয়।’ মামলার বিষয়ে তিনি জানেন না। একই ব্যক্তি দুইয়ের অধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হলেন কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে তাঁর কিছু করার নাই।