মনজু ইসলাম ঃ
ভোলা প্রতিনিধি।। ভোলায় জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে জালিয়াতি করে একই সাথে দুই স্বামীর সংসার করার অভিযোগ উঠেছে নূর নাহার নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। একটি জাতীয় পরিচয় পত্রে নিজের নাম নূর নাহার, পিতা- রফিকুল ইসলাম, মাতা হনুফা বিবি। অপর একটি জাতীয় পরিচয় পত্রে সে নিজের নাম তামান্না আকতার, পিতা-শামসুল হক দুলাল, মাতা-মনোয়ারা বেগম। সে একেক যায়গায় একেক পরিচয় দিয়ে প্রতারনা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার স্বামী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এসকল অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, ভোলা পৌরসভার ০৮নং ওয়ার্ড মুসলিম পাড়ার রফিকুল ইসলামের মেয়ে নূর নাহারের সাথে ২০০৮ সালে পারিবারিকভাবে ইসলামী শরীয়া মতে বিয়ে হয়। আমাদের দাম্পত্য জীবনে বেশ সুখেই কাটছিলো। বিয়ের কয়েক বছর পর বেড়িয়ে আসতে থাকে তার আসল রূপ। অশালীন চলাফেরা, বেপরোয়া জীবন আর একাধিক খারাপ ছেলেদের সাথে উঠাবসাসহ নানা বিকৃত চরিত্র বেড়িয়ে আসতে থাকে। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে আমার সাথে এবং আমার বাবা-মায়ের সাথে স্ত্রী নূর নাহারের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। এরই মধ্যে আমাদের ঘরে মহুয়া নামের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ভোলার সদরের রাজাপুরের জনতাবাজার এলাকায় আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পাশেই ঘরভাড়া করে বসবাস শুরু করি। সেখানে গিয়ে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এবং আমার সাথে আরো খারাপ আচরণ শুরু করে। এক পর্যায়ে সে যাতে এসকল কর্মকান্ড থেকে ফিরে আসে এবং ভালো হয়ে যায় সে জন্য তাকে তার বাবার বাড়ির পাশে ভোলা সদরে বাসা ভাড়া করে রাখি। সেখানেও সে পরিবারের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন ছেলেদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে তাকে তালাকের মাধ্যমে কাবিনের এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধ ও ভরনপোষন বাবদ আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করি। যেহেতু আমার মেয়েটি তখনো খুব ছোট তাই তাকে নুর নাহারের কাছ থেকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
ফলে মেয়েকে দেখতে প্রায় আমাকে যেতে হতো। মেয়ের খরচের টাকা পয়সা দিতে হতো। এ সুযোগে সে ছলচাতুরী করে ও আমাকে ফাঁদে ফেলে ২০১৫ সালপ আমার কাছে দ্বিতীয় বারের মতো তিন লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে বসে।
মহিউদ্দিন আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার সাথে দ্বিতীয় বিয়ের পর সংসার চলাকালিন সময়ে নিজেকে বিধবা পরিচয় দিয়ে ১০ লাখ টাকা কাবিনে সালমান রহমান নামে এক ছেলেকে বিয়ে করে। এসময় নূর নাহার প্রতারণা করে একটি নতুন একটি জাতীয় পরিচয়পত্র করে। সেটিতে সে নিজের নাম তামান্না আকতার, বাবার নাম শামসুল হক দুলাল, মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম উল্লেখ করেন। সে দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে প্রতারণা করে আসছে।
এ অবস্থায় আমি তাকে ২০১৭ সালে ডিভোর্স দিয়ে প্রাণ হারানোর ভয়ে দেশ ত্যাগ করে মালেশিয়া চলে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়েও আমার শেষ রক্ষায় হয়নি। সে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১০টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মহিউদ্দিন বলেন, নূরুন নাহার ওরফে তামান্না আক্তার আমাকে এখনো বিভিন্ন মিথ্যা মামলার হুমকি দিচ্ছে। আমাকে জেল খাটানোর ভয়সহ আমার পরিবারকে নাজেহাল করার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমার জীবন আজ বিপন্ন। টাকা পয়সা, জায়গা জমি, ধন সম্পদ সব হারিয়ে আজ আমি নি:স্ব। আমার বাঁচার মতো কোনো অবলম্বন এখন আর নেই। অথচ মাথার উপর একেরপর এক মামলার খড়ক। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেই।
সর্বশেষ আমি প্রশাসনের কাছে এসব মামলার সঠিক তদন্ত করে এ নারীর হাত থেকে আমাকে এবং আমার পরিবারকে বাঁচানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।