ভোলার ধনিয়ায় বানভাসিদের মাঝে প্রথম আলোর ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ

 

 

 

নিজেস্ব প্রতিবেদক

প্রথম আলো বন্ধুসভার দল যখন ত্রাণ নিয়ে পৌঁছাল, তখনো আশপাশের বাড়িঘর সবকিছু জোয়ারে প্লাবিত। যে ব্লকবাঁধের ওপর প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণের কথা ছিল, সে এলাকাও ডুবে গেছে। শেষে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের নাছিরমাঝি গ্রামের একটি উঁচু বাড়ির উঠানে ১০০ পরিবারকে দেওয়া হয় ত্রাণ। সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের নাছিরমাঝি গ্রামসহ আশপাশের কোড়ারহাট, হ্যাতনারহাট এলাকার প্রায় ২০০ পরিবার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে এভাবেই দিনে দুবার জোয়ারে ভাসছে। এসব পরিবারের প্রধান পেশা মেঘনা নদীতে মাছ ধরা। কিন্তু মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমে গত মঙ্গলবার রাত থেকে মাছ ধরায়ও নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ অবস্থায় একপ্রকার দিশেহারাই হয়ে পড়েছে এই পরিবারগুলো। ত্রাণ নিতে আসা ব্যক্তিরা জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে অস্বাভাবিক জোয়ারে এসব পরিবারের ঘরের ভিটা, উঠান, পুকুরের মাছ, খেতের ফসল, হাঁস-মুরগি পর্যন্ত ভেসে গেছে। লোকজন ঘরের ভিটার চারপাশ পলিথিন দিয়ে মুড়ে কোনোরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁইটি রক্ষার চেষ্টা করছে। নাছিরমাঝি গ্রামের বিবি রহিমা (৪৩) ত্রাণ নিতে এসে বলেন, জোয়ারে তাঁর ঘরের বেড়া খুলে গেছে। ভিটার মাটি ধুয়ে গেছে। নদীর ভাঙনে সাত বছর আগে একবার বসতবাড়ি হারিয়েছেন। তারপর নাছিরমাঝি গ্রামে ঠাঁই নিয়েছেন। তিনি জানান, এবারের মতো অস্বাভাবিক জোয়ার এর আগে দেখেননি তিনি। একই গ্রামের খাদিজা বেগম জানান, তাঁর স্বামী জেলে। মাছ ধরতে পারলে সংসার চলে, না হলে না খেয়েই থাকতে হয়। মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় এখন তাঁর স্বামী বেকার। আর হ্যাতনারহাট এলাকার শাহানারা বেগম (৫৪) বলেন, ‘জোয়ারের দমায় তিনডা মুরকা, দুই হাঁস ভাসি গেছে। নদীর কিনারে ঘর, নিজেরা বাঁচোনের লাগি ঘরের মাচায় উইটছি, হাঁস-মুরকার খবর লইতাম পারিনো।’ প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বিতরণ করা ত্রাণের মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আলু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রথম আলোর ভোলা জেলা প্রতিনিধি নেয়ামত উল্লাহ্,প্রভাষক এম হেলালউদ্দিন গোলদার, ভোলা ইসলামিয়া ইউনানি মেডিকেল কলেজের প্রভাষক মহিউদ্দিন, মদনপুর আলোর পাঠশালার সহকারী শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন, ভোলায় প্রথম আলো বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আরিয়ান আরিফ,দপ্তর সম্পাদক ফজলে আলাম কিছলু প্রমুখ

SHARE