মোঃ আশরাফুল আলমঃ
আজ ৭ মে/২০২০ । ২০০৭ সালের এই দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিল। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষিত জরুরি অবস্থা চলাকালীন সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে বাংলাদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সে সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক অবৈধ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু শেখ হাসিনা তৎকালীন সরকারের বে-আইনী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশে ফেরার ঘোষণা দিলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সারাদেশ ব্যাপী। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক দৃঢ়তা, সাহস ও গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর চাপে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হন। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে,৭ মে শেখ হাসিনা ঢাকায় ফিরে এলে লাখো জনতা তাকে অভ্যর্থনা জানায়।
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে মিছিল শোভাযাত্রা সহকারে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে নিয়ে আসে। দেশে ফিরে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় শুরু করেন নবতর সংগ্রাম। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হয় দেশবাসী। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভীতসন্তস্ত্র হয়ে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তাকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করে। ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে কারান্তরীণ রাখা হয়। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমন এবং চিকিৎসা শেষে ৪ ডিসেম্বর স্বদেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। এতে আরও বলা হয়, অতঃপর গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ব্যাপক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। আন্দোলনের মুখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় জোরপূর্বক রাষ্ট্র ক্ষমতায় চেপে বসা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। শুরু করেন সংকটের আবর্তে নিমজ্জমান অবস্থা থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তোলার সংগ্রাম। দিন বদলের অভিযাত্রায় উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম এবং উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনের ইতিহাসে ৭মে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তণ একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন ৭ মে উপলক্ষে প্রতিবছর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কিন্তু এবছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে সৃষ্ট সংকটে শেখ হাসিনার নির্দেশে সব ধরনের জনসমাগমপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিহার করে আসছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ৭ মে উপলক্ষে বাঙালির চিরঞ্জীব আশা ও অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস জননেত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘয়ূ কামনা করে ঘরে বসেই পরম করুণাময়ের নিকট বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নির্দেশনা প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে করোনা সংকট মোকাবেলায় চলমান কর্মোদ্যোগকে আরও বেগবান করে তোলার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেছেন দলটি।