টোব্যাকো বলছে, জুনের মধ্যেই প্রতি সপ্তাহে ওই ওষুধ ৩০ লাখ ডোজ উৎপাদন করতে পারবে তারা। তাদের দাবি সত্য হলে, ভ্যাকসিন বাজারে আনার দৌঁড়ে থাকা অন্য কোম্পানির চেয়েও বিএটি অনেকখানি এগিয়ে থাকবে। অন্য কোম্পানিগুলো বলছে তাদের ওষুধ বাজারে আনতে অন্তত ১ বছর লাগবে।
বিএটি চায় যত দ্রুত সম্ভব তাদের ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে রোগীদের ওপর প্রয়োগ করতে। বর্তমানে প্রি-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালাচ্ছে কোম্পানিটি। পাশাপাশি, অনুমতি যেন দ্রুত পাওয়া যায় সেজন্য মার্কিন ওষুধ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা ও দেনদরবার শুরু করে দিয়েছে তারা।
বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর স্বাস্থ্য শাখা কেন্টাকি বায়োপ্রোসেসিং (কেবিপি) এই ওষুধ নিয়ে কাজ করছে। এর আগে একই প্রতিষ্ঠান ইবোলার ওষুধও এনেছিল।
কেবিপি’র দাবি, তারা এমন এক অ্যান্টিবডি খুঁজে পেয়েছে, যেটি কভিড-১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আর জিনগতভাবে পরিবর্তিত (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড) তামাক চারার মাধ্যমে ওই অ্যান্টিবডি প্রস্তুত করা হচ্ছে!
লন্ডনের শেয়ার বাজারের বিশ্লেষকরা বিএটি’র এই ঘোষণাকে ‘বেশ বিস্ময়কর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। এই ঘোষণার পর কোম্পানির শেয়ার ৪ পয়েন্ট বেড়ে গেছে!
কেবিপি’র চেয়েও দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য ও ওষুধ শিল্পে খ্যাতনামা ও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তাদের ওষুধ বাজারে আসতে অনেক সময় লাগবে।
ইতিমধ্যেই বৃটিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বিএটি। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, যত দ্রুত সম্ভব এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা শুরুর জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি জেফেরিজ-এর ওয়েন বেনেট বলেন, “এই ঘটনা থেকে দেখা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেকটা আধুনিক হয়েছে বিএটি।” তিনি আরও যোগ করেন, এই দাবি যদি সত্য হয় ও সব ঠিকঠাকভাবে সফল হয়, তাহলে বিএটি’র সুনাম অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে।
বিএটি’র বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালক ডেভিড ও’রেইলি বলেন, “ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও জটিল প্রক্রিয়া। কিন্তু আমরা মনে করি, আমাদের টোব্যাকো প্লান্ট টেকনোলজি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমরা বড় ধরণের সাফল্য পেয়েছি। আমরা এখন এই কভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিততে সরকার ও সকল অংশীদারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও বলেন, “কেবিপি অনেকদিন ধরেই তামাক পাতাকে আর কী কী কাজে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছে। একটি বিকল্প তারা খুঁজে পেয়েছে। তা হলো, তামাক চারা ব্যবহার করে ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কভিড-১৯ রোগের বিস্তার থামাতে চলমান বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
তবে ভ্যাকসিন প্রস্তুতে বিএটি একাই চমক সৃষ্টি করেনি। এ সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন ভোগ্যপণ্য কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন করোনা ভাইরাস পরীক্ষা আরও দ্রুতহারে করা জন্য সরকারের সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের চুক্তি করে।