লালমোহন থেকে তপতী সরকারঃ
জয়নাল আবেদীন মিয়া। বয়স ৮৩ বছর। কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে চলতে হয় তাকে। শরীরের চামড়ায় ঘোচ পড়ে গেছে। শরীরে অনেক রোগের বাসা বেধেছে।
বর্তমানে ভিক্ষা না করলেও কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন তিনি। বেশি দূর পর্যন্তু হাটতেও পারেননা। কিছু সময় হাটতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ভাল চিকিৎসা সেবা বা ঔষধ কেনার মতো অবস্থা তার নেই ।জোগাড় হয় দুবেলার খাবার। এক বেলা থাকেন না খেয়ে।
জানা যায়, ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের দক্ষিন চর ছকিনা গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের গ্রামের মৃত জালাল আহমেদের ছেলে জয়নাল আবেদীন । দুই ছেলে, পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে বেশ ভালই কাটছিল তাদের সংসার।গত দু বছর আগে জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী মারা যান এবং মেয়েদের বিয়ে দেয়ার পর অনেকটা নি:স্ব হয়ে পড়েন তিনি। বয়সের ভারে বন্ধ হয়ে যায় আয় রোজগার। ছেলেদের আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল না থাকায় খুব কষ্টে তার দিন কাটে। পরে বার বার বয়স্ক ভাতার জন্য মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে ধর্না ধরেছেন। অনেক আকুতি মিনুতির পরেও তার ভাগ্যে জোটেনি বয়স্কভাতা।
জয়নাল আবেদীন মিয়া জানান, আয় রোজগার বন্ধ হওয়ার পর ছেলেদের সামান্য আয় রোজগারে কোন রকম দিন কাটে । বয়স্ক ভাতার জন্য মেম্বার চেয়্যারমানসহ সমাজের অনেকের কাছে গিয়েছি কোন সাড়া পাইনি । কয়েকবার মেম্বরের বাড়ি পর্যন্ত গেছি। তারা শুধু বলে হবে। মনে হয়, আমি মরার পর হবে।
ঐ ওয়ার্ডের ফারুক মেম্বার জানান, ৬৫ বছরের ওপরে যাদের বয়স হয়েছে, তাদের নাম লিস্ট করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেয়া দেয়া হয়েছে। আর জয়নাল আবেদীন মিয়ার নাম লিস্টে আছে। আশা করছি সে বয়স্ক ভাতায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
লালমোহন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মামুন জানান, বয়স্ক ভাতার তালিকায় নাম অর্ন্তভুক্ত করার একমাত্র এখতিয়ার ইউনিয়ন কমিটির। ইউনিয়ন কমিটি জয়নাল আবেদীন মিয়র নাম নাম অন্তর্ভুক্ত করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।