মনজু ইসলাম/ টিপু সুলতানঃ
লাশের সাথে ঘরবসতি যে মানুষটির। কোন প্রিয়জন কিংবা পরিচিত জনের লাশ নয়, আপরিচিত জনের লাশ বললেও ভুল হবে। এক্কে বারে বে-ওয়ারিশ লাশ। ভোলা জেলায় বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে ভেসে আসা বা পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া যাওয়া পরিচয়হীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ যখন লাশের কোন অভিবাবক না পেয়ে বে-ওয়ারিশ ঘোষনা করেন তখন সেই লাশটির অবস্থা এতোটাই খারাপ থাকে যে কেহই এর দায়িত্ব নিতে চান না। তখন যে মানুষটি রাতের আঁধারে কিম্বা দিনের বেলায় এই ভয়ংকর গন্ধযুক্ত লাশ টিকে গোশল থেকে শুরু করে মাটি দেয়ার দায়িত্বভার বহন করনে তিনি আমাদের ভোলার সকলের প্রিয় মানুষ হাফেজ মোহাম্মদ বনী আমিন।
ভোলার এলিট সমাজ তাকে বিখ্যাত ক্বারী ও শ্রেষ্ট ইমাম হিসেবে চিনলেও সাধারন মানুষ তাকে বনী আমিন ভাই হিসেবেই বেশি চিনে। হাফেজ বনী আমিন এই পর্যন্ত নিজ হাতে ১৬৫ টি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করলেও কোন দিন যত্নহীনভাবে কোন লাশকে দাফন করেননি। হাফেজ বনী আমিন ভোলা নিউজ অফিসে এসেছিলেন ভয়াল ১২ ই নভেম্বরের ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর সেই ভয়াল স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করতে। ভোলার মানুষের প্রিয় এই মানুষটি থেকে জানতে চেয়েছিলাম এই দীর্ঘদিনের পঁচা ভয়ংকর দুর্গন্ধযুক্ত ১৬৫ টি লাশ দাফন করতে তাকে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে? উত্তরে তিনি কোন প্রকারে নিজের কষ্টের কথা না জানিয়ে ব্যাবস্থাপনার অসুবিধার কথা জানিয়ে বলেছেন, চরনেওবাদের চিতাখলার পরে আলিয়ামাদ্রাসার পিছনের খালপারে এই বেওয়ারিশ লাশগুলো দাফন করা হয়। সেখানে যাওয়ার রাস্তাটি খুবই খারাপ, লাশ নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। তার উপর কোন লাইটের ব্যাবস্থা না থাকায় রাতের বেলায় অনেক সমস্যায় পরতে হয়। এছাড়া পানি ছাপলাইয়ের কোন প্রকার ভালো ব্যবস্থা না থাকায় অনেক দিনের লাশ গুলো দাফনে সমস্যা হয়ে থাকে। রাস্তাসহ এই তিনটি জিনিসের ব্যাবস্থা হলে আর কোন সমস্যা থাকতো না। এ দিকে ভোলার এই বে-ওয়ারিশ লাশ গুলো নিয়ে কখনো কোন প্রকার বিপাকে পরতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে হাফিজ বনি আমিন বলেন, কোন দিনই তেমন সমস্যায় পরতে হয়নি ;তবে ১৬৫ টি লাশের মধ্যে দুটি লাশের ওয়ারিশ পাওয়া যাওয়ায় তাদেরকে প্রশাসনের মধ্যমে যথাপোযুক্ত প্রমানের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে। ভোলা নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকে এই মানবতাবাদি মানুষটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সাথে সাথে মহান আল্লাহর কাছে তার পবিত্র হায়াত কামনা করেছে।