ইব্রাহিম আকতার আকাশ,ভোলা: ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়ায় ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মালেকা বেগমের ওপর পৈশাচিক হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদার ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক ছবিটি ভাইরাল হয়ে পড়ে ভোলার নেটিজেন দের মধ্যে। এরপরেও হামলাকারী বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নিয়ে তজুমদ্দিন থানার ওসি বলেছেন অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন।
বুধবার (৪ জুন) সকাল ৯টার দিকে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে।
নির্যাতনের শিকার মালেকা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ভিজিএফ ত্রাণের তালিকা নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ হয়। ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডের জন্য একশো জন সুবিধাভোগীর তালিকা চাইলেও কর্মকর্তা তা কমিয়ে দিতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে রোববার সকালে তিনি পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে গেলে পরিকল্পিতভাবে তাঁর ওপর পাশবিক হামলা চালানো হয়।
মালেকা বেগম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদার, ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন কর্মচারী এবং দলের কিছু মহিলা সমর্থক তাকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতরে টেনে নিয়ে যান। সেখানেই রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে মুখ, মাথা ও পিঠে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। শতশত মানুষের সামনে তাকে উলঙ্গ করে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ইব্রাহিম হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি ঘটনার সময় ইউনিয়ন পরিষদে ছিলাম না। ঘটনাটি পরে জেনেছি এবং কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান বলেন, ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তজুমদ্দিন উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন: চাঁচড়া ইউনিয়নের সাহসী ও ত্যাগী নেত্রী মালেকা বেগমের ওপর এই পৈশাচিক হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানাই। ৮ বছর ধরে জনগণের সেবা করে আসা একজন নারী নেত্রীকে যেভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তা কেবল একজন নারীকে নয়, সমগ্র মানবতা ও নারীর সম্মানকে পদদলিত করেছে। এটি সভ্য সমাজের জন্য এক গভীর লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত। এই নারকীয় হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান
মন্তব্য করুন