ইয়ামিন হোসেন।।
নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনদের বিপদে স্বামীর অজান্তে পরিবারের গচ্ছিত স্বর্ণ অলংকার বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছে। কেউ পুত্রবধূর, কেউ বোনের বা ভাবির অলংকার না জানিয়ে বন্ধক রেখেছেন। সেই স্বর্ণসহ অসংখ্য মানুষের প্রায় ১০ কোটি টাকার স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার গুঞ্জন ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা জংশন বাজারের সুইটি জুয়েলার্সের মালিক সোহাগ বালার বিরুদ্ধে। শনিবার (৩১ মে) সকাল থেকে সোহাগের বন্ধ দোকানের সামনে ৫ শতাধিক নারী পুরুষ ভীড় জমিয়েছেন। অনেকে সোহাগের ইলিশা বটতলা বাড়ীতে গিয়ে ভীড় জমিয়েছেন। তবে সোহাগের বসতঘর তালাবদ্ধ করে লাপাত্তা হয়েছেন, সেই সাথে পরিবারের সদস্যরাও লাপাত্তা।
এদিকে সোহাগ গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে গেছে, নাকি অদৃশ্য কারণে আত্মগোপনে আছেন নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ। তবে ধারনা করা হচ্ছে দোকান এবং বাড়ী-ঘরে তালাবদ্ধ থাকায় পালিয়ে গেছে এমন গুঞ্জন উঠেছে। নারীদের শেষ গচ্ছিত সম্পদ হারিয়ে শত শত নারীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে ইলিশা।
প্রিয়জন হারানোর মত শোক বইছে নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীদের মধ্যে। ঈদ উপলক্ষে নতুন বিবাহ অনুষ্ঠানে কেউ জামাইয়ের জন্য কেউ বা হবু বউয়ের জন্য স্বর্ণ বানাতে পুরো টাকা দিয়ে হতাশ। কেউ স্বামীকে না জানিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বিপদে স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছে। আবার সে টাকা ফেরত দিয়েছে। দুইদিন পর স্বর্ণ ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও আজ পালিয়ে যাওয়ার খবরে বারবার অজ্ঞান হতে দেখা গেছে অনেক নারীদের। অনেকের স্বামী খবর জানতে পারলে সংসার বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানা গেছে।
হাসনুর নামের এক নারী জানান, আমার ৭ ভরি স্বর্ণ। আমার মেয়ের, ননদের স্বর্ণ এনে বন্ধক রেখেছি সব শেষ। জিনিস না নিলে আমার মাইয়ার (মেয়ে) সংসার থাকবে না। বারেক দফাদার বলেন, ঈদের পরে মেয়ের বিবাহ, তাই দেড় ভরি স্বর্ণ দিয়ে জিনিস বানাতে দিয়েছি। টাকাও পরিশোধ করেছি। এখন আমার সব শেষ। এছাড়া নাজমা, ফাতেমা, হাজেরা, খালেক, অদুদ মাঝিসহ অসংখ্য গ্রাহক বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তবে সোহাগের বাড়ীতে গিয়ে ও কেউ না থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভোলা জুয়েলার্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অবিনাশ নন্দী জানান. সোহাগের খবরটি আমি শুনেছি। সোহাগ আমাদের সংগঠনের সদস্য নয়, তবুও যেহেতু স্বর্ণ ব্যবসায়ী তার এ ঘটনা দুঃখজনক। আমাদের দীর্ঘ বছরের সুনামকে এ ধরনের কিছু অসাধু চক্রের জন্য বদনাম হচ্ছে। আমি প্রশাসনকে বলবো সোহাগকে খুঁজে বের করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা এবং ভুক্তভোগীদের স্বর্ণ ও টাকা উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় যেন কোন নিরপরাধ সাধারণ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য প্রশাসন ও বাজার কমিটির প্রতি অনুরোধ জানান।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান
মন্তব্য করুন