অনলাইন ডেস্ক।।
ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণকাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, উৎপাদিত গ্যাস ব্যবহার করে জেলায় সার ও শিল্পকারখানা গড়ে তোলা, জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ ভোলাবাসীর ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে ভোলা ফোরাম, ঢাকা।
বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে জেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে ভোলাবাসী এ মানববন্ধনে অংশ নেন। এতে ভোলা ফোরাম ঢাকার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন। মানববন্ধন শেষে রাজপথে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। একপর্যায়ে মিছিলে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টাকে ভোলাবাসীর দাবিগুলো আদায়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ভোলা ফোরাম, ঢাকার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা নিজামুল হক নাঈমের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন ফোরামের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও দৌলতখান ফোরামের সভাপতি এম কামাল উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক আলমগীর হোসেন সোহাগ, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন রুবেল, বোরহান মাহমুদ ও কবির হোসেন নূমান প্রমুখ।
ফোরামের সহকারী সেক্রেটারি ও লালমোহন ফোরামের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শাহে আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চরফ্যাশন ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, বোরহান উদ্দিন ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম, লালমোহন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, মনপুরা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন নাহিদ, দৌলতখান ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম সোহাগ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ভোলা ফোরাম, ঢাকার সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক নাঈম তার বক্তব্যে বলেন, ভোলাবাসী যে দাবিগুলো নিয়ে রাজপথে রয়েছে তা কোনো আবদার নয়, এসব দাবি ভোলাবাসীর অধিকার। ভোলা জেলাকে একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হিসেবে বিবেচনা করলে চলবে না, সারা দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনে দাবিগুলো বাস্তবায়ন জরুরি।
তিনি বলেন, অতীতের সরকার ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়নের নামে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছিল, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেনি। আমরা জানতে পেরেছি, ভোলা-বরিশাল সেতু বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার যদি এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে এটা হবে ভোলাবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
নিজামুল হক নাঈম বলেন, আপনারা জানেন- ভোলাবাসী সব সময় ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকেন। জাতীয় প্রয়োজনে যে কোনো সংগ্রামে সামনের সারিতে ভূমিকা পালন করেন। জুলাই বিপ্লবেও একক জেলা হিসেবে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছে ভোলা জেলা। এই জেলার বাসিন্দাদের শাহাদাতের সংখ্যাও অন্য সব জেলার চাইতে বেশি।
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও ভোলা ফোরাম ঢাকা’র সহ-সভাপতি ড. মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি সভাপতির বক্তৃতায় বলেন, ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ স্মারকলিপিতে যেসব দাবি জানানো হয়েছে সব দাবিই ভোলাবাসীর ন্যায্য দাবি। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এসব দাবি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিন, স্বাভাবিকভাবে দাবি মেনে নেয়া না হলে ভোলাবাসী আঙুল বাঁকা করতে বাধ্য হবেন।
প্রধান উপদেষ্টাকে দেয়া স্মারকলিপিতে ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ, ভোলায় মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল স্থাপন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও ভোলার গ্যাস জেলার সর্বত্র ব্যবহার নিশ্চিতকরণসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে- সর্বত্র এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, সার কারখানাসহ বিভিন্ন মিল কারখানা প্রতিষ্ঠা করা, নদীভাঙন রোধে টেকসই ও কার্যকরী ব্যবস্থাগ্রহণ, ভোলাকে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা, ভোলা-ঢাকা বিমানবন্দর স্থাপন করা। মানববন্ধনে বক্তারা ভোলাবাসীর দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান
মন্তব্য করুন