ইব্রাহিম আকতার আকাশ: ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পৌর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ শতাংশ জমি নিয়ে নুরে আলম, মাওলানা হানিফ ও ইয়ানুর বেগম নামের ৩ ব্যক্তির মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। এতে কোনো পক্ষই সুষ্ঠু সমাধানে বসতে চাচ্ছে না বলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকালে সরেজমিন ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। জমি দাবি করা ৩ মালিক হলেন- ওই ওয়ার্ডের নুরে আলম, মাওলানা হানিফ ও ইয়ানুর বেগম।
নুরে আলমের অভিযোগ, ২০১০ সালে স্থানীয় তসলিম আহমেদ খোকন ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ২২ শতাংশ জমি ক্রয় করে বসবাস করে আসছেন। ৭ বছর পর ২০১৭ সালের দিকে ওই জমির ১০ শতাংশ জমি মাওলানা হানিফ ও মাইনুদ্দিন গংরা পাবেন মর্মে দাবি করা হয়। এমনকি গেল কয়েকবছর আগে হানিফ গংরা ওই জমিতে দুইটি ঝুপড়ি ঘরও তুলেছেন। যা নিয়ে হানিফ গং ও নুরে আলমের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলছে। এরইমধ্যে সম্প্রতি ইয়ানুর বেগম নামের আরেক ব্যক্তি ওই জমি পাবেন মর্মে দাবি তুলছেন। গেল কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে নুরে আলম, হানিফ গং ও ইয়ানুর বেগমের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।
নুরে আলম আরো দাবি তুলছেন, সম্প্রতি হানিফ গংরা বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে রাতের আঁধারে জোরপূর্বক আরেকটি ঝুপড়ি ঘর তুলেছেন। তারা আইনকে তোয়াক্কা করছেন না। ওই জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও হানিফ গংরা জোরজবরদস্তি করে রাতের আঁধারে জমিতে ঘর উত্তোলন করে ঝামেলার সৃষ্টি করছেন। যাঁর ফলে এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে গিয়েও তিনি কোনো সুষ্ঠু সমাধানও পাচ্ছেন না। পান থেকে চুন খসলেই হানিফ গংদের স্ত্রী ও ছেলেসন্তানরা তাকে মারতে উদ্যত হন বলেও তিনি অভিযোগ করছেন।
এদিকে, ইয়ানুর বেগম নামের আরেক নারী দাবি করছেন ওই ১০ শতাংশ জমি থেকে তিনিও সাড়ে ৩ শতাংশ জমি পাবেন। তিনি ক্রয় সূত্রে ওই জমির মালিক। তবে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি ওই জমি ভোগদখল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। যাঁর ফলে সরকার পতনের পর তিনি ওই জমি দখলে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মাওলানা হানিফ ও মাইনুদ্দিন গংরা জানান, আজ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে তারা ওই জমির ক্রয় সূত্রে মালিক। ২০১০ সাল পর্যন্ত ওই জমি পতিত ছিল। এরপর তিনি বালু দিয়ে ওই জমি ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু, প্রতিপক্ষরা এতে বাঁধা সৃষ্টি করার কারনে তিনি বাসাবাড়ি নির্মাণ করতে পারছেন না। মাওলানা হানিফের স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম পাল্টা অভিযোগ তুলে বলছেন, বিরোধপূর্ণ ওই জমির সুষ্ঠু সমাধান করতে তিনি স্থানীয় বিচারক ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে বারবার গিয়েও সুষ্ঠু কোনো সমাধান পাচ্ছেন না।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, ওই ১০ শতাংশ জমি দখলে নিতে ৩ মালিকের মধ্যে যে বিরোধ চলে আসছে। তা যেকোনো মুহুর্তে বড় ধরনের শঙ্কায় পড়তে পারে। বিশেষ করে নুরে আলম ও মাওলানা হানিফ গংদের মধ্যে এ জমি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ওই জমি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলমান আছে। একই জমি ৩ মালিক দাবি করে আসছেন। কেউই কারো কথা শুনছে না। সেজন্য এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু সমাধানও হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে অভিযোগ পেলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে আসে।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান
মন্তব্য করুন