ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলার চড়ভূতা ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ মানুষের ভিজিডি ও টিসিবি কার্ডের চাউল বিতরণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কালাম ও সেক্রেটারি মোতাহারসহ তাদের ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে। একাধিক দিন তাদেরকে ৫০ কেজি ওজনের চাউলের বস্তা নিয়ে যেতে দেখা গেছে। কিন্তু ২০ কেজি করে চাউল দিয়ে ভয়ভীতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মোতাহার ও কালাম বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে পরিষদের ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোলা-৩ আসনে বিএনপির কর্ণধার মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমের নাম ভাঙিয়ে তারা এসব অপকর্ম করছে বলে অভিযোগে জানা যায়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে মেজর হাফিজের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
জানা যায়, শুধু চাউল চুরি নয়, তাদের চাঁদাবাজিতেও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষ। এসব ক্যাডার বাহিনী বেতুয়ার খাল খননের টেন্ডার পাওয়া ঠিকাদার থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দেওয়ার কারণে খাল খননের কাজে নিয়োজিত ভেকুর ব্যাটারীও চুরি করার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। রাতের অন্ধকার খালের বাঁধ কেটে দেওয়ার সময় হাতেনাতে পুলিশ দু’জনকে আটক করে। সেসময় আরও ২৫-৩০ পালিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় লালমোহন থানায় মোঃ আবুল কালাম নামে (৫৫) বছরের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আবুল কালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০/২৫ জন মিলে আমাকে হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে হামলা চালান। এসব চাঁদাবাজরা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দালাল ছিলেন, বর্তমানে বিএনপির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে চাঁদার জন্য আমার উপরে হামলা চালায়। এজাহারনামীয় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় গত ২২ তারিখে একটি এজাহার দায়ের করি। আমি পেশায় একজন ঠিকাদার। আমি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন ঠিকাদারী কাজ করে আসতেছি।
তিনি বলেন, চরফ্যাশন পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে ১৯ (উনিশ) কোটি টাকা বাজেট মূল্যে ভোলা জেলার লালমোহন থানার তেঁতুলিয়া নদী হইতে মেঘনা নদী পর্যন্ত ১৯ কিঃ মিঃ বেতুয়া নদী পুনঃ খনন কাজের বাজেট আমার হয়। লালমোহনে আমি আমার লোকজন এবং খাল খনন কাজের ২৫টি ভেকু (মাটি খনন কাজে ব্যবহৃত) ধলীগৌরনগর হরিগঞ্জ বাজার সংলগ্ন বেতুয়া খাল পাড়ে অবস্থান করি। তেঁতুলিয়া নদী এবং মেঘনা নদী হতে পানি আসলে আমাদের নদী খনন কাজে বাধা সৃষ্টি না হয় সেজন্য দুই পাশে বাঁধ নির্মান করি, নদী খনন কাজ শুরু করি। দিনে কাজ শেষ করে রাতে খাল খনন কাজ বন্ধ রাখি। কিন্তু পরে চাঁদা দাবি করে আমার উপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তবে এখনও তারা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমি আতঙ্কে রয়েছি। আমার জীবন হুমকির মুখে।
এছাড়াও ৫ আগস্টের পর বিএনপির সাবেক এমপি মেজর হাফিজের নাম ভাঙিয়ে মোতাহার হোসেন লুটপাট ও সাধারণ মানুষের জায়গা-জমি দখলসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। একাধিক এলাকাবাসী জানিয়েছেন, মোতাহারের ক্যাডার বাহিনীর যন্ত্রণায় তারা অতিষ্ঠ। একাধিক জায়গায় অভিযোগ দিয়েও তারা কোন সুরাহা পাচ্ছেন না। এত অপকর্মের পরও মোতাহার গ্রেপ্তার না হওয়ায় তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মোতাহারের বিষয়ে জানতে তাকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান
মন্তব্য করুন