আকস্মিক ঝড়ে লালমোহনে বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা লন্ড-ভন্ড

ভোলা নিউজ ডেস্ক।।

আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে ভোলার লালমোহন উপজেলায় বেশকিছু বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা লন্ড-ভন্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার রাত সোয়া ৯ টার দিকে হঠাৎ করেই বাতাসের প্রচন্ড বেগে আঘাত হানে ঝড়টি। ওই ঝড়ে গাছ উপড়ে এবং বাতাসের তীব্রতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭০টি বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এরমধ্যে ২০টি বসতঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৫০টি বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনার। এছাড়াও ক্ষতি হয়েছে বিদ্যুৎ এবং কৃষি ফসলের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইলিশাকান্দি এলাকার মুনাফ খলিফা বাড়ির জামাল খলিফার বসতঘরটি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে রয়েছে। ওই ঘরটি নতুন করে নির্মাণ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
জামাল খলিফার স্ত্রী বুলবুল বেগম জানান, আমাদের বসতঘরের সামনে কাপড়ের দোকানও ছিল। আমি দোকান পরিচালনা এবং সেলাইয়ের কাজ করতাম। শুক্রবার রাতে আমি ছেলেকে নিয়ে ঘরে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে ঘরের পেছনে থাকা একটি চাম্বুল গাছ উপড়ে আমাদের ঘরের ওপর পড়ে। চোখের পলকেই পুরো ঘরটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। ভাগ্য ভালো বিধায় ছেলে আর আমি কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে যাই।
তিনি আরো জানান, আমরা অসহায়। স্বামী চট্টগ্রামে রিকশা চালান। ঝড়ে ঘরটি এমনভাবে ভেঙেছে যে, নতুন করে নির্মাণ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তাই সরকারের কাছে আমি ঘরটি তোলতে সহযোগিতা কামনা করছি। সহযোগিতা না পাওয়া পর্যন্ত অন্যের ঘরেই আমাদের সকলের আশ্রয় নিতে হবে।
অপরদিকে, লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চরকচ্ছপিয়া এলাকার আব্দুল গণি ফকির বাড়ির আনিছল হকের বসতঘরটিও ভেঙে গেছে। ঘরের পেছনে থাকা একটি রেইনট্রি গাছ উপড়ে পড়ে ভেঙে যায় তার ঘরটি। এ সময় আহত হন আনিছল হক। তার ছেলে আবু সাঈদ বলেন, হঠাৎ করেই ঝড়। ওই ঝড়ের ছিল প্রচন্ড তীব্রতা। এতে আমাদের ঘরের পেছনে থাকা একটি রেইনট্রি গাছ উপড়ে ঘরের পেছনের অংশ পুরোপুরি ভেঙে যায়। ঘর চাপায় আহত হয়েছেন বাবা। ঘরটি মেরামতের জন্য সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি।
একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চরপাতা এলাকার দূর্লভ গাজী বাড়ির জুবায়ের ও জাহিদের বসতঘরের ওপরও উপড়ে পড়েছে চাম্বুল গাছ। এতে ভেঙেছে তাদের ঘরও। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জুবায়ের জানান, রাতে খেতে বসেছি। এ সময় হঠাৎই ঝড় আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘরের পেছনে থাকা একটি গাছ উপড়ে ঘরের ওপর পড়ে। ওই গাছ চাপায় আমার এবং আমার ভাইয়ের বসতঘরটি ভেঙে যায়। যখন গাছটি ঘরের ওপর পড়ে তখন এর নিচে আমি চাপা পড়ি। তখন বিষয়টি স্ত্রী দেখতে পেয়ে আমাকে টেনে বের করেন। যার জন্য কোনো রকমে বেঁচে যাই।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষ বলেন, শুক্রবার রাতে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে ৭০টি বসতঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা আংশিক এবং পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া কৃষি ফসল এবং বিদ্যুতেরও ক্ষতি হয়েছে। আমরা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করছি। ওই তালিকা প্রস্তুত সম্পন্ন হলে তা জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হবে। এরপর বরাদ্দ পেলে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE