টিপু সুলতান
ঘূর্ণিঝড় সিডরের চেয়েও বেশি শক্তিশালী হয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’। ইতিমধ্যে এর কেন্দ্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ২২১ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানতে পারে উপকূলে। আম্ফানের কারণে পাঁচ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রলয় থেকে বাঁচাতে উপকূলীয় অঞ্চলের ২২ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, একদিকে করোনাভাইরাস, আরেকদিকে নতুন বিপদ আমাদের সামনে এসেছে। পরিস্থিতি দেখে বুধবার সকাল ৬টায় মহাবিপৎসংকেত দেওয়া হতে পারে। এরপর আর কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া কঠিন হবে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৯ মে) রাত ৯ টায় মোংলা সমুদ্রবন্দর ৬১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। মঙ্গলবার দিবাগত শেষ রাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্য দিয়ে এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।
এদিকে মোংলা ও পায়রা বন্দরে আগের মতোই ৭ এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, বরিশালসহ বেশকিছু জায়গায় সৃষ্ট ঘূণিঝড়ের কারণে এসব এলাকায় মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। একইভাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঝুকিপূর্ণ বরগুনার আড়াই লাখ মানুষের মধ্যে পঞ্চাশ ভাগ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, আম্পানের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ এবং বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। যেসব এলাকায় তাপপ্রবাহ বইছে তা কিছুটা কমতে পারে।