টিপু সুলতান
বাবুই পাখি গ্রামবাংলার ছোট্র একটি পাখির নাম। এ পাখি যেমন বুদ্ধিমান তেমনি শিল্পির মতো অপরুপ তার কারুকার্য।
বাবুই পাখি দেখতে অনেকটা চুড়ই পাখির মত।তবে আকারে একটু বড়। এরা ঝাঁক বেঁধে তাল গাছের চুড়ায় বসবাস করে, এরা খুব পরিশ্রমি পাখি। গ্রাম গঞ্জে এই বাবুই পাখি আর আগের মত চোখে পড়ে না।
“বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চুড়ই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির, ঝড়ে।
বাবুই হাসিয়া কহে, সন্দেহ কি তাই? কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়। পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা, নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাঁচা”।
রজনীকান্ত সেনের কবিতার সেই বাবুই পাখি আজ হারিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে এখন আর আগের মতো এই পাখি দেখা যায় না।
এক শ্রেনীর লোক শিকার করছে বাবুই পাখি। অন্যদিকে খাঁচায় বন্দি করে বেচা কেনাও হচ্ছে এ পাখি।
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাবুই পাখির বাসা। বাবুই পাখিরা সাধারণত তাল গাছের চুড়ায় বাসা বাঁধে।
এই বাবুই পাখির বাসা গ্রাম গঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী দৃশ্য। বাবুই পাখি নিয়ে কবি সাহ্যিতীকরা অনেক গল্প ও কবিতা লিখেছেন। তাল গাছের পাতার নিচের অংশে বাবুই পাখি বাসা তৈরী করে।
বাবুই পাখিদের বাসা বানানোর নির্মাণ শৈলী, কারিগরী দক্ষতা দেখে আধুনিক যুগের প্রকৌশলীদেরও ভাবিয়ে তোলে।
তাল পাতার ছেড়া তন্তু দিয়ে তারা বাসা বাঁধে।
পাতা ছিড়ে এনে সুখ্য ভাবে ঠোঁট দিয়ে তা গাঁথুনী করে বাসা তৈরী করে, তাই এর নাম শিল্পী বাবুই পাখি। ঝড় বৃষ্টিতেও সেই বাসা ভেঙ্গে পড়ে না।
তাল পাতার বাসায় কোন ভাবেই জল ঢোকে না। এ বাসায় প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য রয়েছে একাধিক দরজা। এ এক অদ্ভুত দৃশ্য।
অন্ধকার ঘরকে কিভাবে আলোকিত করতে হয় তাও বাবুই পাখিরা ভালো ভাবেই জানে।
বাবুই পাখির বাসার ভিতর আধুনিক যুগের মত লাইটের ব্যবস্থা আছে। বাসার ভেতর একটু গোবর রাখা হয়, তার ভেতর জোনাকি পোকার মাথাটি ঢুকিয়ে দেয়।
ফলে জোনাকির আলোতে বাসা আলোকিত হয়ে উঠে। গ্রাম গঞ্জের তাল গাছে এই বাবুই পাখির দেখা মেলে।
এই দৃশ্য সাধারণ বাংলাদেশর প্রতিটি পল্লি গ্রামে দেখা যায়।