সড়কে মৃত্যুর মিছিলে আরো তিন শিক্ষার্থী।

বিশেষ প্রতিনিধিঃভোলা নিউজ
সড়কে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে আরো তিন শিক্ষার্থী। গতকাল ডেমরা ও খিলগাঁওয়ে পৃথক দু’টি দুর্ঘটনায় তারা প্রাণ হারান। নিহতরা হচ্ছে- ইবনে তাহছিম ইরাম (১৮), আব্দুল্লাহ আল নোমান (১৭) ও তার বন্ধু তাজউদ্দিন হোসেন তুহিন (২০)। দুর্ঘটনায় আবার উত্তাল হয়ে উঠে ডেমরা, রামপুরা, স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা। শিক্ষার্থীরা এ সময় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। দিনভর এই বিক্ষোভে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।ডেমরায় রমজান পরিবহনের বাসের চাপায় ইবনে তাহছিম ইরাম (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ডেমরা-রামপুরা সড়কের মোস্তমাঝির মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর থেকে তার সহপাঠীরা ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। অবরোধের কারণে এই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত ইরাম দুপুরের দিকে সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। মোস্তমাঝি মোড়ে পৌঁছানোর পর স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ছেড়ে আসা রমজান পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৩৬৮৭) বাস তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এসময় বাসের চাপায় ইরামের মাথা থেঁতলে যায়। ইরামকে চাপা দিয়ে বাসের চালক ও তার সহকারী পালানোর চেষ্টা করে। পরে রামপুরা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ওই বাসসহ তার চালক শামীম ও চালকের সহকারী মুন্নাকে আটক করে। এদিকে, বাস চাপায় ইরাম নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দা ও তার সহপাঠিরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে। তারা ডেমরার আমুলিয়া, স্টাফ কোয়ার্টার ও সুলতানা কামাল সেতু এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে ও সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে ডেমরা, রামপুরা, যাত্রাবাড়িসহ আশে পাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সরজমিন দেখা গেছে, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা রামপুরা সড়কের আমুলিয়ায় গাছ, বাঁশ ও ইট দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে তাদের। এছাড়া এলাকার মীরাপাড়ার একটি গ্যারেজে রাখা অন্তত ৩৫টি গাড়ি ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা। ডেমরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ইরাম নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রথম দিকে তারা উত্তেজিত হয়ে যানবাহন ভাংচুর করে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে তারা শান্তিপূর্ণ অবরোধ করে। নিহত ইরাম ডেমরার আমুলিয়া পূর্ব পাড়ার মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। স্থানীয় গোলাম মোস্তফা স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। এদিকে,খিলগাঁও ফ্লাইওভারের বাসাবো ঢালে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রন হারিয়ে নোমান ও তুহিন নামে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। বেলা ৩টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তারা দুজনেই মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। সবুজবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হেদায়েত হোসেন জানান, বেলা ৩টার দিকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের বাসাবো ঢালে দ্রুত গতিতে মোটর সাইকেল চালিয়ে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ে তারা। আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে গুরুতর আহত হয় তারা দু’জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার সময় মোটর সাইকেলটি চালাচ্ছিলো নোমান। পেছনে বসা ছিলো তুহিন। নিহত নোমান ঢাকা স্টার্ন স্কুল এন্ড কলেজ এর নবম শ্রেণীর ছাত্র। সে সবুজবাগের ৩৮০ ওহাব কলোনীর বাসিন্দা মোহাম্মদ শেখ আহমেদ মজিদের পুত্র। তার সঙ্গে নিহত তুহিন পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজ এর দশম শ্রেণীর ছাত্র। সে একই এলাকার ৪০১ ওহাব কলোনীর বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র।

SHARE