তাইফুর সরোয়ারঃ-
১৪টি শর্ত সাপেক্ষে পবিত্র রমজান মাসে সুস্থ ব্যক্তিদের মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও তারাবি পড়তে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আলহাইয়াতুল উলালিল জামিয়াতুল কওমিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সরকারের কাছে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সৃষ্টিকর্তার অশেষ ক্ষমতারই বহিঃপ্রকাশ এ করোনাভাইরাস। জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, অগ্রগতি হয়েছে। তারপরও মানুষ আজ সৃষ্টার এ সৃষ্টির কাছে অসহায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি মুসলিমের উচিত আল্লাহর পথে ফিরে আসা। নিজেদের গুনাহর জন্য পরম করুণাময়ের কাছে তওবা করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নত মেনে জীবনযাপন করা।
তাই রমজান মাসে ১৪টি শর্ত সাপেক্ষে সুস্থ ব্যক্তিদের মসজিদে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমার নামাজ ও তারাবি আদায় করতে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান তারা। করোনাভাইরাসের বিস্তার যাতে না হয় তাই নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের শর্তগুলো মেনে চলারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
শর্তগুলো হলো-
১. মসজিদে জায়নামাজ বা গালিচার পরিবর্তে কার্পেট বিছানো।
২. জুমার নামাজে বয়ানসহ জামাত, খুতবা ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করা।
৩. জামাতে দাঁড়ানো সময় একজনের থেকে অন্যজনে মধ্যে অন্তত দুই ফুট জায়গা রাখা।
৪. প্রত্যেক মুসল্লির নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে আসা।
৫. প্রত্যেককে অবশ্যই মাস্ক পড়ে নামাজ পড়তে আসা।
৬. নামাজ পড়তে এসে একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি বা হাত না মেলানো।
৭. প্রতি ওয়াক্তে নামাজ শুরুর আগে সম্পূর্ণ মসজিদে জীবাণুনাশক দিয়ে ভালোকরে পরিষ্কার করা।
৮. পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়স যাদের, তাদের মসজিদে না আসা।
৯. নামাজ পড়তে এসে মসজিদের সামনে বা ভেতরে কোথাও জামায়েত না হওয়া। এবং নামাজ পড়া শেষে একইভাবে জামায়েত না করে বাসায় চলে যাওয়া।
১০. যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ অর্থাৎ জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে তাদের নামাজ পড়তে না আসা।
১১. যেসব ব্যক্তি করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ বা অঞ্চল থেকে এসেছেন তাদের মসজিদে না আসা। পাশাপাশি এসব মানুষের সংস্পর্শে গেছেন এমন ব্যক্তিদেরও নামাজ পড়তে না আসা।
১২. বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাদের সেবায় যারা নিয়োজিত তাদের মসজিদে না আসা।
১৩. মসজিদে গিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন, এমন আশঙ্কা যাদের তাদেরও না আসা।
১৪. রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর মসজিদে সম্মিলিতভাবে ইফতার না করা।
বিবৃতি আরো বলা হয়েছে, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। শর্তগুলো পালনে প্রতি মসজিদে একটি করে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করতে হবে। যেখানে এসব শর্ত মানা হবে না, যেসব এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি সেখানে প্রশাসন জামাতে নামাজ বন্ধ রাখতে পারবেন।
শাহ আহমদ শফি ছাড়াও বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আরও রয়েছেন, আলহাইআতুল উলয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়ার কো চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মুফতি মো. ওয়াক্কাস, মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ প্রমুখ।