ইভান তালুকদারঃ
যত দিন যাচ্ছে ভোলায় আশংকাজনক হাড়ে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলা শহর থেকে শুরু করে জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এদিকে ভোলার একমাত্র সরকারী সদর হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু সনাক্তকরণের উপাদান না থাকায় জেলা জুড়ে আতংক দেখা দিয়েছে।
গত ১ সপ্তাহে দ্বীপ জেলায় ডেঙ্গু জ্বরে ১০ জন রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে রোগ সনাক্ত করার জন্য হাসপাতালে নেই ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা। তবে ডেঙ্গু রোগে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জেন। ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কামাল মিয়া (৩০) ঢাকাতে বেড়াতে গিয়ে বাড়িতে এসে জ্বরে আক্রান্ত হলে পরীক্ষা করে দেখে যায় তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুধু কামাল হোসেন নয় তার মতো এখন অনেকেই ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস নিয়ে এসেছেন।
ভোলা সিভিল সার্জেন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদার জানায়, প্রতিদিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে কয়েক শতাধিক রোগী। সেবা নিতে আসা আগত রোগীদের রুটিন করে প্রতিদিন সচেতন করা হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে । বলা হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কিছু নিয়ম কানুন মেলে চললে কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হবে না বলে জানান সিভিল সার্জন ।
এতো কিছুর পরেও এই হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ভর্তি হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা। গত ১ সপ্তাহে ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ঢাকাতে বেড়াতে কিংবা ঘুরতে গিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। যারা বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন ভোলা সদর হাসপাতালে।
রোগীর সাথে আসা আত্মীয় স্বজনরা জানান, আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। সামান্য জ্বর হলেও ভর্তি করাচ্ছি হাসপাতালে। কিন্তুু চিকিৎসা নিতে গিয়ে পরতে হচ্ছে বিপাকে। হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বর পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে টেস্ট করাতে হচ্ছে। সেখানে ডেঙ্গু পরীক্ষা ৫০০ টাকার কথা বলা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ১হাজার টাকার উপরে। ফলে অনেক রোগী ও অভিবাবকরা হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।
ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা হয় জেলার সিভিল সার্জন ডা. রথীন্দ্রনাথ মজুমদারের সাথে তিনি মানবজমিনকে বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই বরং সচেতন হলে দিন দিন রোগির সংখ্যা কমে যাবে। এ ছাড়া ভোলা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য যে উপাদনগুলো দরকার তার জন্য ঢাকাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানানো হয়েছে । দু-একদিনের মধ্যে কিডস গুলো চলে আসলে হাসপাতালেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবো আমরা। ভোলায় এই পর্যন্ত ১০জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জন ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ৫ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ীতে ফিরে গেছে। ২ জনকে ঢাকাতে রেফার করা হয়েছে। বাকি ৩ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ রথীন্দ্রনাথ মজুমদার।
সিভিল সার্জনের এই বক্তব্য মানতে নারাজ ভোলার সচেতন নাগরিক পরিষদের সম্পাদক সফিকুল ইসলাম তিনি মানবজমিনকে বলেন, ভোলার একমাত্র সদর হাসপাতালটিতে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু সনাক্তের উপাদান না আসায় ভোলার ২০ লক্ষ মানুষ আতংকে রয়েছেন, অনতিবিলম্বে ভোলার ৭ টি উপজেলায় ডেঙ্গু সনাক্তের উপাদান এনে ভোলা দ্বীপের মানুষদের আতংক কাটানো দায়িত্ব ভোলার সিভিল সার্জনের।
মনিরুল ইসলাম,
ভোলা-০১.০৮.১৯