মনজু ইসলাম ঃ
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের রাম কেশব গ্রামের আবুল কামাল কালুর মেয়ে ও স্থানীয় চর গঙ্গাপুর দাখিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী ফারজানা আক্তারের আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় প্রধান আসামী মোঃ মিরাজ হোসেন কামালকে গ্রেফতার করে বোরানউদ্দিন থানা পুলিশ।আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী গ্রেফতার খবর পেয়ে মেয়ের কবরের পাশে বসে থাকা অনশন শেষে বাড়ি ফিরেন অসহায় পিতা।
ফারজানার পিতা মোঃ আবুল কালাম কালু জানান, বাকী আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করছি।আমার মেয়েকে উত্যক্ত ও নির্যাতন করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাদ্ধ করেছে মামলার সকল আসামীরা। এ নিয়ে আমি অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে মেয়ের ছবি নিয়ে কবরের পাশে বসে থেকে আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে অনশন করতে বাদ্ধ হয়েছি।তিনি আরো বলেন,পুলিশ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করলেও বাকি আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে।মামলার বাকী আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার না করলে আবারও মেয়ের কবরের পাশে অনশনে বসবেন।
চর গঙ্গাপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ মহিউদ্দিন জানান, বাংলাদেশে মিডিয়ার যে কত গুরুত্ব তার প্রমাণ আবারও মিলেছে। এক অসহায় পিতা ও আমাদের মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রীর সংবাদ প্রচার করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি ‘ভোলা নিউজ.কমকে।স্থানীয় আবুল কালাম কাশেম জানান, প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের খবরে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। বাকী আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে। এছাড়াও আসামীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তরমূল শাস্তি হলে ভবিষ্যতে কোন মেয়ে এধরনের উত্যক্ত ও নির্যাতন করে আত্মহত্যার প্ররোচনা করতে সাহস পাবে না।বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মোঃ মাজহারুল আমীন জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর অভিযান চালিয়ে রাজধানী ঢাকার শ্যামলী এলাকার একটি বাড়ি থেকে ফারজানা আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার প্রধান আসামী মোঃ মিরাজ হোসেন কামাল গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে এ মামলার আরেক ৫ নম্বর আসামী মোঃ মাইনুদ্দিনকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, বাকী আসামীদের গ্রেফতারের জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাম কেশন গ্রামের আব্দুল কামাল কালুর মেয়ে ও স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী ফারজানা আক্তারকে মাদ্রসা যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করতো মামলার প্রধান আসামী মিরাজ। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিশ বসলেও বন্ধ হয়নি উত্যক্ত। উল্টো প্রধান আসামীর পক্ষ নিয়ে তার আসামীর পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসা ছাত্রী ফারজানাকে চরিত্রহীন অপবাদ নিয়ে বাড়ি গিয়ে নির্যাতন করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট আসামীরা ফারজানাকে বাড়িতে গিয়ে নির্যাতন করে আত্মহত্যার প্ররোচানা করে। এরপরই ফারজানার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন ফারজানার পিতা বাদি হয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা জন্য ৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে পিতা মেয়ের কবরের পাশে ছবি নিয়ে অনশনে বসেন।