এইচ এম নাহিদ, ভোলা ॥
কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী এক মহামারি সৃষ্টি করেছে। মৃত্যুর মিছিল কিছুতেই যেন থামছেনা। আমাদের দেশেও এর ব্যাতিক্রম নেই। ৬৪ জেলার মধ্যে ভোলায় এখনো কোভিড-১৯ করোনার রোগী শনাক্ত হয়নি। যদিও জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রায়ই মারা যাচ্ছে মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই করা হচ্ছে সচেতনাতা মূলক প্রচার প্রচারনা। সন্ধা ৬ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত সব ধরনের জনসমাগমের উপর জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাছাড়া নিত্যপন্য ক্রয় করার জন্য সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সকাল থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেও বাস্তবে তার উল্টো চিত্র দেখা যায়।
এখানে প্রতিনিয়ত বেপরোয়া হচ্ছে জনসমাগম, মানা হচ্ছেনা প্রশাসনের কোন লকডাউন। করোনাকে কোন রকম পাত্তা না দিয়েই জেলা/উপজেলাশহর গুলো ও গ্রাম গঞ্জের হাট বাজার গুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভির লক্ষ করা যায়। এখনো নৌপথ ব্যাবহার করে ভোলায় ঢুকছে ঢাকা সহ নারায়নগঞ্জের মানুষ। এনিয়ে সচেতন মহলের আতঙ্কের শেষ নেই। এমনিতেই দ্বিপজেলা ভোলা নদী বেষ্টিত হওয়ায় সারাদেশ থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন এই অঞ্চলটি। এখানে করোনা শনাক্তের কোন মেশিন,কিট কিছুই নেই। তারা প্রশাসনের কাছে দাবি করছেন, অচিরেই ভোলাকে যেন লকডাউন ঘোষনা করা হয়।
কর্ত্যবরত ডাক্তারগণ জীবনের ঝুকি নিয়ে করোনায় উপসর্গ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করছেন। তাদের ভিতর একধরনের ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি প্রশাসনের কাছে, অচিরেই যেন ভোলার এই জনসমাগম বন্ধ করা হয়। তানা হলে এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যে চরম দুর্ভোগ নেমে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
ভোলার সিভিল সার্জন রতন কুমার ডালি বলেন, আমরা যতটুকু জানতে পারছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভোলার জন্য একটি পিসি ল্যাব অনুমোদন করেছেন। আশা করছি খুব দ্রুতই আমরা সেটা পাব। আর সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে এখানের মানুষ খুব কমই মানছে। যদি এটা নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে আমাদের জন্য খারাপ দিনের অপেক্ষা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, এক দিকে মানুষের বাহিরে আসাও প্রয়োজন, অন্যদিকে তাদের ঘরে থাকাটাও প্রয়োজন। আমাদের দেশের মানুষ স্বল্প আয়ের মানুষ, কাজ কর্ম ছাড়া দীর্ঘদিন বাসায় থাকাটাও কঠিন, অন্যদিকে বাধ্যতা মূলক ঘরে থাকতেই হবে। এই দুঠোর মাঝখানে থেকেই আমারা কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া উন্নত রাষ্ট্রের চেয়ে আমাদের দেশের জনসংখ্যা বেশি। উন্নত রাষ্ট্রের জনসংখ্যার ঘনত্ব ১০২-১০৩- এবং ১২৩ তার চেয়ে কম ও আছে, সেই দিক থেকে আমাদের ঘনত্ব আছে ১২৫০। তাদের ঘরে বাৎসরিক ইনকাম ৪০ হাজার ডলার, অখচ আমাদের আছে ২ হাজার ডলার। সেই ক্ষেত্রে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। আপনার মাধ্যমে ভোলা বাসীকে জানাতে চাই, আল্লাহর রহমতে আমরা এখনো কোভিড-১৯ করোনা রোগী থেকে মুক্ত আছি। এবং জেলাকে করোনা মুক্ত রাখার জন্য কাজ করছি। প্রয়োজনে যদি এ্যাকশনে যেতে হয় আমরা তাও যাব।