মনজু ইসলাম/টিপু সুলতানঃ
মাথায় ছাতা ধরে রেখেছেন কোন এক চেলা। আর মধ্য যুগীয় মোড়লদের মত হেটে যাচ্ছেন ভোলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল হক। পূর্বের কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই তিনি সদর ইলিশার বেড়িবাদের সামনে থাকা ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে উচ্ছেদ করতে যান। ম্যাজিস্ট্রেট এর হাকডাক দেখে ভয়েই দোকানদাররা যার যার দোকান ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলো। মোড়লের কি আর তড়সয় ভেকু বুলডুজার নাচালালে তাকে কি কেউ বিচারক মনে করবে। এসব চিন্তা থেকে গরিব অসহায় দোকান মালিকদের ঘর সরিয় নিতে সময় না দিয়ে তা মাটির সাথে গুড়িয়ে দিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট যাওয়ার আগথেকে ঘর সরিয়ে নিতে ব্যাস্ত গোলাম মোহাম্মদের ছেলে নুর মোহাম্মদ ঘরের চালের উপর থেকে নিচে পরে মারাত্নক ভাবে যখম হন। ইংরেজী সিনেমার ভিলেনদের ধ্বংশযজ্ঞের এমন দৃশ্য দেখে হতবাগ হন উপস্থিত সাধারণ মানুষ।
১৪ মার্চের উচ্ছেদের দৃশ্য ইলিশার অসহায় ব্যাবসায়িদের ২০০১ সালের লুটের কথা মনে করিয়ে দিলেন ভোলার জেলা প্রশাসন। সদর উপজেলার ২নং ইলিশা একাধিকবার নদী ভাঙ্গনের স্বীকার ভোলার অসহায় দারিদ্র অসহায়ের আবাস স্থল। ২০১৫ -১৬ সালে রাক্ষুসে মাতাল মেঘনা হঠাৎ ভয়ংকর তান্ডবলীলা চালানোর পর, দিশেহারা মানুষ গুলোর পাশে দেবদূত হয়ে দাড়ান ভোলার সভ্যতার জনক জননেতা তোফায়েল আহমেদ। জিওব্যাগ ও ব্লক বাঁধের মাধ্যমে নদী ভাঙ্গার হাত থেকে বাচানোর পর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ও ইলিশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগগের নেতাদের সহয়তায় এই অসহায় আওয়ামীলীগ কর্মিরা ইলিশা ঘাটে ঘর উত্তোলন করে ব্যাবসা করে আসছিলেন। গতকাল ১৪ মার্চ ভোলার জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল হকের নেতৃত্বে পানি উন্নয়নবোর্ড বিনা নোটিশে ইলিশা ঘাটে অসহায় ব্যাবসায়িদের উপর চালায় তান্ডবলীলা। ইলিশা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক হোসেন সহিদ সরওয়ার্দী জানান, ২০০১ সালের নির্বাচনে ভোলা সদর উত্তরের আওয়ামীলীগের অফিসটি ছিলো মালেক মাওলানার জংশন বাজারের ঘরে নির্বাচন কালীন সময়ে তার এই ঘরটি আওয়ামীলীগের অফিস করার অপরাধে একাধিকবার বিএনপি জামায়াতের কর্মীরা মাটির সাথে গুড়িয়ে দেয় এবং ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী মালেক মাওলানার বাড়ীর মাছ লুট করে। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে নোমানের ধার দেনা করে করা বরফ মিলটিও গতকাল বিনানোটিশে ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল হক এর নেতৃত্বে ভাংচুর করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাদের কাছ থেকে বেড়িবাঁধের জন্য ১ একরের বেশি জায়গা দিলেও মাত্র ১ হাতের জন্য কোটি টাকার বরফকলটি সময় না দিয়ে ভেঙ্গে দেন রায়হানুল হক।
ব্যাবসায়ি রফিকুল ইসলাম জানান, বেড়ি বাধের খবর শুনে বিনা নোটিশে আমি নিজ থেকে মিস্ত্রী নিয়ে আমার দোকান ঘর সরিয়ে নিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে কোন এক ম্যাজিস্ট্রেট এসে ভেকু দিয়ে আমার ঘরের মালামালসহ ঘরটি ভেঙ্গে মুহুর্তের মধ্যে মাটির সাথে মিশি দেয়।
ইলিশা জংশনের আওয়ামীলীগ আবু বলেন, তোফায়েল আহমেদের শান্তিপ্রিয় ইলিশার ব্যাবসায়িরা তাদের জায়গা জমি নিজ থেকে বেড়িবাঁধের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। মালেক মাওলানার কয়েকশ গাছ কেটেও এক কানির মত জমি নেয়ার পরেও গত কালকে ম্যাজিস্ট্রেট এর এমন অমানবিক তান্ডবলীলা ২০০১ সালের নির্বাচনের পরের দিনের লুটের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তব এ নিয়ে কথা বলতে রায়হানুল হকের 01305554498 নাম্বারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ ছাড়া স্বেচ্ছায় জমি ছেড়ে দেয়া মানুষের উপর হঠাৎ করে বিনা নোটিশে এধরনের অমানুবিক আচরনের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেছেন ইলিশার নদী ভাংতি অসহায় ব্যাবসায়িরা।