ভোলায় দুই যুগ অতিবাহিত শিক্ষকের বেতন নেই, বিদ্যালয় থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ।

বিশেষ প্রতিনিধি,ভোলানিউজ.কম,

ভোলায় প্রায় দুই যুগ ধরে শিক্ষকতা করেও প্রধান শিক্ষকের দাবিকৃত ছয় লাখ টাকা দিতে না পারায় স্কুল থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার সুন্দরখালি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক মোসা. সেতারা।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মোসা. সেতারা লিখিত অভিযোগে বলেন, ১৯৯৩ইং সালে সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের সুন্দরখালী গ্রামের হাওলাদার বাড়ীর দরজায় বাপ্তা সুন্দরখালী বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকেই তিনি সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। এবং স্কুলে নিয়মিত ক্লাশ পরিচালনা করে আসছেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে বিদ্যালয়ের জমিদাতার কোনো লোককে সদস্য না রেখে প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহরের স্বামী মো. গোলাম মোস্তফাকে বিদ্যালয়ের সভাপতি করায় এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে একই নামে ওই বিদ্যালয়ের পাশে অন্য একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ফলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে ভোলা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২৩৬৩, তারিখ- ২৬/০৯/১৯৯৭ইং। পরে আদালত নাজমুন নাহারকে প্রধান শিক্ষক, মোসা. সেতারা ও নুরুন নাহারকে সহকারি শিক্ষক করে পূর্বের বিদ্যালয়টির পক্ষে রায় প্রদান করেন।
সর্বশেষ ২০১৩ সালে প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাড়া দেশের সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয় করণের ঘোষান দেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাগজপত্র প্রথমে জমা না দেয়ায় এত দিনে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ করা হয়নি।
সর্বশেষ ২০১৭ইং সনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বামী মো. গোলাম মোস্তফা মোসা. সেতারার নিকট থেকে বেতন করানোর কথা বলে ছয় লাখ টাকা দাবী করেন। কিন্তু সে টাকা না দেয়ায় তার স্থানে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মো. ইব্রাহিম খলিল নামের এক জনকে নিয়োগ দেন। সে শিক্ষক বর্তমানে সৌদিতে রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ইং সনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রধান শিক্ষিক নাজমুন নাহার, সহকারি শিক্ষক নুরুন নাহার ও মোসা. সেতারা বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পাঠ দান করে আসছে। এর মধ্যে ১৯৯৭ সনে নুরুন নাহারের অন্যত্র চাকুরী হয়ে যাওয়ায় নাজমুন নাহার ও মোসা. সেতারা মিলে প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে আসছে। পরবর্তীতে ২০১৭ইং সনে সৌদি প্রবাসী মো. ইব্রাহীম খলিল, সালমা বেগম ও রাজিয়া সুলতানার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা করে নিয়ে এই তিন জনকে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এর কিছু দিন পর এই তিন জনের মধ্য থেকে সালমা বেগম ও রাজিয়া সুলতানাকে বাদ দিয়ে নতুন করে মো. ফেরদাউসকে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিদ্যালয়ে বর্তামনে চার জন শিক্ষক আছে তবে সে তাদের নাম জানেন না। বিদ্যালয়ের কোনো তথ্য প্রয়োজন হলে তার স্বামীর কাছ থেকে জানতে বলেন।
ভোলা জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এই নামের কোনো বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব নেই। এর আগেও এই নামে একটি বিদ্যালয়ের কাগজপত্র মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তা আমরা পাঠাতে দেই নাই।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ৬এপ্রিল-২০১৮)

SHARE