ভোলায় কেন্দ্র দখলের অভিযোগে ভোট বর্জন।।

 

মনজু ইসলাম / টিপু সুলতান ।ভোলার দৌলতখান উপজেলা চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনে ভোটকেদ্র দখলের অভিযোগে সতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দিন নাজু হাওলাদার ভোট বর্জন করেছেন। দুপুর ২ টায় সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জন করেন সাবেক এই বিএনপি নেতা। ইভিএম ভোট হওয়ায় কেন্দ্রের বাহিরের রাস্তা দখলের সাথে সাথে কেদ্রের বুথেত্র মধ্যেও দখল করতে দেখা যায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আব্দুল হাইসহ তার কর্মী সমর্থকদের।ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনে সকাল আটটায় ভোট শুরু হলেও ভোটারের উপস্থিতি ছিল কম। মহিলা ভোটারদের অভিযোগ তাদের কেদ্রের কাছে গেলেই মারধর করেন নৌকা প্রতিকের ক্যাডাররা।সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজু হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, নৌকার সন্ত্রাসীবাহিনীরা পথে পথে ভোটারদের বাঁধা দেওয়া, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া এবং ভোটারদের আঙুলের ছাপ নিয়ে বের করে দেওয়া এবং নৌকার লোকজন বুথে ঢুকে নৌকার ওপর টিপ দেওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কমে গেছে। তবে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হাই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভোটারদের নম্বর স্লিপ না দেওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম। এখন স্লিপ দেওয়া শুরু হয়েছে।নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মারা যান। ২৫ এপ্রিল এ ইউনিয়নে নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ইউনিয়নে যাচাই-বাছাইয়ের পরে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। এরমধ্যে দুজন দলীয় প্রার্থী। বাকীরা স্বতন্ত্র। এখানে বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দিন হাওলাদার (আনারষ) এবং আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হাই (নৌকা)এর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হচ্ছে। এখানে ২৩ হাজার ভোটার।নির্বাচন কার্যালয় সূত্র আরো জানায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষে পুলিশ, রেব, বিজিবি, আনসার বাহিনী ও নির্বাহী হাকিম মোতায়েন রয়েছে।বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে চরপাতার ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, এক একটি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি হাতে গোনা কয়েক জন। ২ নম্বর ওয়ার্ড কেন্দ্র চরপাতা নলগোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৬টি কক্ষে নৌকার এজেন্ট ছাড়া কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। কিন্তু নৌকার ২-৩জন করে এজেন্ট দেখা গেছে। এ কেন্দ্রের এজেন্টদের বুথে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এখানে ভোটারদের অভিযোগ, ইভিএমে আঙুলের ছাপ দেওয়া শেষ হলে বুথের মধ্যে ঢুকে প্রতীকে টিপ দেওয়ার আগে নৌকার লোকজন টিপছাপ দিয়ে দিচ্ছে।এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা শ্যামল কুমারের কাছে বুথে ঢুকে প্রার্থীর এজেন্ট কেনো ভোট দিচ্ছে জানতে চাইলে কর্মকর্তা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সকলকে সাবধান করে দেন। কর্মকর্তা আরও বলেন, আনারষের এজেন্টদের আইডি কার্ড আনতে বলেছি। কিন্তু তারা নিয়ে আসেনি। অন্য তিন প্রার্থীর কোনো এজেন্ট আসেনি।

আইন শৃংখলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মো আসাদ একই কথা বলেন।
একই দৃশ্য দেখা যায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সহ অধিকাংশ কেন্দ্রে । নৌকার এজেন্ট ছাড়া কোনো প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি কোন কেন্দ্রে ই। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একজন ছাড়া সব কক্ষে এজেন্ট আছে।প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা জানান, সকাল থেকেই ভোটার উপস্থিতি খুব কম।ইভিএমে এই প্রথম ভোট দিতে এসেছেন ২নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল বারেক। তিনি বলেন, শুধু আঙুলের ছাপ দিতেই আধ ঘন্টা লেগেছে।
৭ নম্বর ভোট কেন্দ্রের ভোটার হালিমা বেগম বলেন, আঙুলের ছাপ না পাওয়ায় ভোট দিতে পারেননি।
আনারসের চেয়ারম্যান প্রার্থী নাজিম উদ্দিন হাওলাদার মানবজমিনকে বলেন, সবগুলো কেন্দ্র থেকে তাঁর আনারষের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। পথে পথে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাঁধা দিচ্ছে। এ কারণে ভোটার উপস্থিতি কম। যারা ভোট দিতে যাচ্ছে তাদের হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে বের করে দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব রয়েছেন। নৌকার প্রতিদন্দ্বী প্রার্থীর ভোট বর্জনের খবর ছড়িয়ে পরলে প্রায় ভোটাররাই কেন্দ্রের আসপাশের এলাকা ছেড়ে বাড়িতে চলে গেলে ভোটার শুন্য হয়ে পরতে দেখা যায় কেন্দ্র গুলোতে।ক্যাপশনঃ চরপাতা ২ নং ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতিকের টুপি পরিহিত প্রার্থী আব্দুল হাইকে কেন্দ্রের ভেতরে ইভিএমে ছাপ দেয়ার পর ভুতের সামনে আসা ভোটারদের নিজের মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করতে দেখা যায়।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE