মাসুদ রানা বোরহাউদ্দিন প্রতিনিধিঃ
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় অন্যকে ফাঁসাতে মানসিক ভারসাম্যহীন ফুফাতো ভাইকে গলাকেটে হত্যা করে মামাতো ভাই মো. বিল্লাল (৪০)
শনিবার সকালে পুলিশ উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের একটি কাঁচা রাস্তার ওপর থেকে আপন মামাতো ভাই মো. নাছির উদ্দিন নসু মিয়ার লাশ দেখতে পায়।পরে বোরহাউদ্দিন থানায় খবর দেয়।
পরে বিকালে তার মামাতো ভাই মো. বিল্লাল প্রাইমারি স্কুলের পিয়ন মোঃ মোকাম্মেল নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার ফুফাতো ভাই নসুকে গলাকেটে হত্যা করেছে মর্মে বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা করতে আসে। পরে পুলিশ তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিল্লাল নিজে নসুকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার দুপুরে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোরহানউদ্দিন থানার এসআই মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন নাছির উদ্দিন ওরফে নসু লালামোহন উপজেলার মহেশখালী গ্রামের মো. সামসুদ্দিনের ছেলে। সে মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার কোনো স্থায়ী বসবাস নেই।
গত কয়েকদিন ধরে নসু তার নানা বাড়ি বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দেউলা শিবপুর গ্রামে আসে।
এ দিকে এ সুযোগটি কাজে লাগাতে তার মামাতো ভাই বিল্লাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর মোকাম্মেল নামের এক ব্যক্তির নামে তাকে হত্যার হুমকি দেয় বলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে থানায় আসেন। কিন্তু থানায় ওসি না থাকায় ডিউটি অফিসার তাকে পরে আসতে বলেন।
এ দিকে ওই রাতে বিল্লাল বাড়ি গিয়ে তার ভারসাম্যহীন ফুফাতো ভাই নাছির উদ্দিন ওরফে নসুকে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের নাম করে ৪-৫টি ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। কিছু সময় পরে তাকে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ির পাশে একটি বিলের মধ্যে।
সেখানে নিয়ে নসুকে প্রথমে পিছন দিক থেকে মাথায় আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে তার গলাকেটে হত্যা করে বাড়ি চলে আসে। পরে সকাল বেলা লোকজন রাস্তার ওপর গলাকাটা লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
বিল্লাল নিজে হত্যা করেছে বলে আদালতে ১৬৪-এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
তিনি জানান, বিল্লালের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা জামা-কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি ম. এনামুল হক বলেন, নাছির উদ্দিন নসু হত্যার ঘটনায় তার মামা জিয়াউল হক বাদী হয়ে বিল্লাল ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামি বিল্লালকে গ্রেফতার করে আদালত।