ইয়ামিন হোসেন/ মনজু ইসলামঃ
ভোলায় মাসুম জাহিদ হত্যার এক বছরেও গ্রেফতার হয়নি মূল আসামিরা। এতে ক্ষোভ আর হতাশা পুরো বাপ্তা এলাকা জুড়ে। ভোলার পুলিশ সুপার মোঃ মোক্তার হোসেন পিপিএম এর ভোলায় একজীবনের সেরা সাফল্য যেমন রয়েছে তেমনি এই একটি ব্যার্থতাই তাকে বাপ্তা ইউনিয়ন বাসির কাছে ব্যার্থ পুলিশ সুপার হিসেবেই পরিচিত করেছে। আজ মাসুম ও জাহিদ হত্যার এক বছরে এসকল হিসেব নিকেশ মেলাচ্ছেন শহরের তিন দিকে ঘেরা প্রানকেন্দ্রর এই ইউনিয়নের জনগন।
ভোলায় চাঞ্চল্যকর বড় ভাইয়ের হাতে ছোটভাইসহ দু’জন খুন হওয়ার এই লোমহর্ষক ঘটানার ৩৭ দিন পর গেল বছর মূল আসামি গ্রেফতার না হওয়ার প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ মিছিল, প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত পরিবারের স্বজনসহ স্থানীয়রা। এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লার নের্তৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছিলো ওই দিন। এতোকিছুর পরেও আজ এই হত্যাকান্ডের এক বছর ফেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয়নি মুল আসামী মামুন ও ফিরোজ।
উল্লেখ্য গত বছরে আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৩ মে রাতে চরের জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে বড় ভাই মামুন ও তার বন্ধু ফিরোজসহ কয়েক জনের হামলায় নিহত হন ছোট ভাই মাসুম ও মাসুমের শ্যালক জাহিদ।
এ ঘটনায় পুলিশ, ওই রাতেই মামুনের দুই ছেলে শরীফ ও আরিফকে আটক করে। আদালতে আটক শরীফ ও আরিফের জবানবন্দিতেও উল্লেখ করা হয়, তারা ছুটে গিয়ে দেখে তার পিতা মামুন ও পিতার বন্ধু ফিরোজ দৌড়ে সরে যাচ্ছে, রক্তাক্ত অবস্থায় মাসুম ও জাহিদ পড়ে আছে। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নিহত জাহিদের ছোট ভাই জাকির হোসেন ও রিয়াজ লিখিত বক্তব্যে জানান, তাদের ভাই জাহিদ ও ভগ্নিপতি মাসুমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ভোলা ও লক্ষ্মীপুর জেলার সীমানায় মধ্য মেঘনায় জেগে ওঠা কানীবগা চরের ৩শ’ একর জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। ওই চরের ভোলা গ্রুপের নের্তৃত্ব দিতেন মাসুম। অপরদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা গ্রুপের সঙ্গে আঁতাত ছিল বড় ভাই মামুনের।
এ বিরোধ দীর্ঘ দিনের। ঘটনার একদিন আগে পরিবারের ২৫ জন অংশীদারের ২০ একর জমির বর্গা ভাগ হিসেবে ১২ লাখ টাকা নিয়ে যান মামুন। মূলত ওই টাকার হিসাব নিয়েই মাসুমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও শেষে খুনের ঘটনা ঘটে।
নিহতদের ভাই জাকির সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ ওই ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে মামুনের স্ত্রীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। মামলার আসামিদের মধ্যে মামুনের স্ত্রী রেহানা ফেরদৌস ও দুই ছেলে শরীফ, আরিফও রয়েছে। এ ছাড়া মূল আসামির তালিকায় থাকা মামুন ও তার বন্ধু ফিরোজ হত্যার এক বছর পেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লাহ।
ক্ষোভ জানিয়েছেন ভোলা জেলা সচেতন নাগরিক পরিষদের সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সফি, তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে ভোলা নিউজকে বলেন, ভোলায় পুলিশ সুপারের এতো সাফল্য অথচ এই শহরের প্রাণকেন্দ্র ঘটে যাওয়া এ চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের মূল আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা চরম ভাবে হতাশ ও আতংকগ্রস্থ। আতংকিত হওয়ার কারণ হলো এধরনের প্রকাশ্যে খুনের ঘটনার আসামিরা গ্রেফতার না হলে কিংম্বা বিচার হীনতার কারনে সবাই যার যার মত অপরাধ করা শুরু করলে এটা এক সময় আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যাবে।
তিনি আরো বলেন, আমর প্রত্যাশা ভোলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন পিপিএম অতিদ্রুত হত্যার মূল আসামি মামুন ও ফিরোজকে গ্রেফতার করে আইনের কাছে সোপর্দ করবে।