ষ্টাফ রিপোর্টার !! ভোলা শহরের ব্যাস্ততম বাণিজ্যিক মহাজনপট্রি নামক এলাকায় “আইল্যান্ড ভিউ” নামক একটি বহুতল ভবন নির্মানকালে পৌরসভার অতি পূরনো একটি ড্রেন দখলের অভিযোগ উঠেছে। ওই ভবনের মালিক মনজুর কাদের মিলন ওরফে ব্রুনাই মিলনের বিরুদ্ধে ড্রেন দখল করার এমন অভিযোগ এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পৌর মেয়রের কাছে আবেদন করেছেন ওই এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ভোলা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম শামছুদ্দিন আহমেদ মিয়া শহরের পানি নিষ্কাশননের জন্য তার জমানায় উক্ত ড্রেনটি নির্মান করেছিলেন। জানা গেছে,শহরের মাসুমা খানম সড়কের বাসিন্দা মনজুর কাদের মিলন দীর্ঘবছর ব্রুনাই প্রবাসী হওয়ার সু-বাদে জেলা শহর ভোলায় বিশাল বিত্ত্ববৈভবের মালিক বনে গেছেন। বিত্ত্বশালী হওয়ার গরমে তিনি ভোলা শহরে একটি অপরাধচক্র’র সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন বলে বিস্তর অভিযোগের অন্ত:নেই। ব্রুনাই বসেই মিলন এই বাহিনীকে পরিচালনা করছেন এমন তথ্যও গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর কাছে রয়েছে। ওই গ্রুপটি ভোলার বিভিন্ন এলাকায় তার মদদে নানাধরনের অপরাধ সংগঠিত করে থাকেন বলে একাধিক সূত্র গণমাধ্যমের কাছে তথ্য দিয়েছেন। সূত্রমতে,এই বাহিনীর মূল কাজ হচ্ছে-বিভিন্নস্থানে বিরোধপূর্ণ মূল্যমান জমিজমা পেশীশক্তির দাপট দেখিয়ে দখল করে ব্রুনাই মিলনকে পাইয়ে দেয়া। তারই ধারবাহিকতায় ভোলা শহরের মহাজনপট্রি নামক এলাকায় একটি মূল্যমান জমি বাগিয়ে নিয়ে সেখানে বহুতল ভবনের কাজ শুরু করেছেন ব্রুনাই মিলন। প্রায় বছরখানেক পূর্বে সেখানে পাইলিং স্থাপনের কাজ চলাকালে পৌরসভার ড্রেন দখলের অভিযোগ আনেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে গেলে,মহাজনপট্রি এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা-ইব্রাহীম খোকন ও স্থানীয় শ্রেনী-পেশার মানুষ অভিযোগ করেন,পাইলিংকাজ চলাকালে মিলনের লেলিয়ে দেয়া গুন্ডাবাহিনী ইমারত নির্মানস্থানের পূর্বপার্শ্বে অবস্থিত পৌরসভার দীর্ঘবছরের অতি প্রাচীন একটি ড্রেন দখল করে নিজের কব্জায় নিয়ে গেছেন। দখলকৃত ওই ড্রেনের জমির মূল্য কোটি টাকার বেশী হবে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন। শুধু তা-ই নয়,ভবন নির্মানের জন্য পাইলিংকাজের বিষাক্ত বর্জ্যসমূহ শহরের প্রধান সড়কের পার্শ্বে নির্মিত পৌরসভার ড্রেনে ফেলা হয়েছিলো। ফলে ভোলা শহরের সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ন এই ড্রেনটি পাইলিংবর্জ্যে ভরে যাওয়ায় ময়লা ও পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে এই ড্রেনটি পরিষ্কার করা না হলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ভোলার মহাজনপট্রিসহ পুরো শহরে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্থানীয় চাল ও মুদী আড়তের কোটি কোটি টাকার মালামাল। তাছাড়া বিষাক্ত ওই বর্জ্যে পরিবেশের ভারসাম্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে ভোলার পরিবেশবিদরা মনে করছেন। ভোলার পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো:সালাউদ্দিন লিঙ্কন’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,পৌরসভার আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনসহ অবৈধ দখলে নেয়া ড্রেনটি পূন:রুদ্ধার করার আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন না দেখায় ব্যবসায়ীমহল হতাশা ব্যাক্ত করেন। এব্যাপারে ওই এলাকার ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো:উমর ফারুক মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান,স্থানীয় সরকার বিধিমালা ভঙ্গ করা হলে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে পৌর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। পৌরসভার প্ল্যান প্রকৌশলী অনিক আহমেদ জানান, ব্যবসায়ীদের আপত্তির মূখে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ফলে বহুদিন এ ভবনের কাজ বন্ধ থাকার পর জমি ও প্ল্যানের নকশায় সংশোধন এনে ভবন নির্মানের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবুও বে-আইনী কিছু করা হলে ইমারত নির্মাণ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত মনজুর কাদের মিলন’র সাথে কথা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন,পৌরসভার ড্রেনের জায়গা তিনি দখল করেননি বরং পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোর ভিতরেও তার ক্রয়কৃত জমির অংশ রয়েছে। তবে পাইলিংবর্জ্যগুলো পৌরসভার ড্রেনে ফেলানো ঠিক হয়নি বলে স্বিকার করেন তিনি। সন্ত্রাসী বাহিনী গড়া কিম্বা ক্ষমতার দাপটে কারো সম্পদ লুটে নেয়ার অভিযোগটিও অবান্তর ও কাল্পনিক বলে দাবী করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে শহরের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান