ভোলায় চর দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত।।

 

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার দৌলতখানের মেঘনার মধ্যবর্তী নেয়ামতপুর চর দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৯ জনকে ভোলা সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদেরকে দৌলতখান হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

সোমবার (৬ মে) দুপুরে চরের দক্ষিণ মাথার ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও আহতরা জানান, মেঘনার মধ্যবর্তী নেয়ামতপুর চরের জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। বিরোধপূর্ণ জমি দখল করতে সোমাবার দুপুরে দৌলতখান থেকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নবীর নেতৃত্বে তিন শতাধিক লোক ৭ টি ট্রলারে করে ওই চরে যায়। চরের দক্ষিণ মাথার খালে ট্রলারগুলো ভিড়ানোর পর চরের বাসিন্দারা তাদের বাঁধা দিলে সংঘর্ষ বাঁধে। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়। তবে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সবাই নবী গ্রুপের।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রুহুল আমিন ও আলী হোসেন জানান,  নেয়ামতপুরে তাদের পৈত্রিক জমি আছে। দৌলতখানের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম নবী, সদর উপজেলার বাপ্তার কামাল মিয়াসহ কয়েকজন ওই জমি দেখার জন্য তাদের নিয়ে যায়। জমি দেখবে এবং পিকনিক করবে বলে তাদের নেয় হয়। সকালে দৌলতখানের লঞ্চঘাট থেকে ৭টি বড় ট্রলারে করে প্রায় ৩শ’ মানুষ ওই চরে রওনা করে। দুপুর ১টার দিকে ট্রলারগুলো চরের দক্ষিন মাথার ঘাটে পৌঁছায়। ট্রলার থেকে চরে নামার সাথে সাথে তাদেরকে ধাওয়া করে এবং এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এসময় অনেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে হামলা থেকে আত্মরক্ষা করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা আরও জানান, চরের বাসিন্দারা সংঘবদ্ধ হয়ে ওই হামলা চালায়।  তোপের মুখে ট্রলারে করে অনেকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে। হামলাকারীরাই তাদের অন্য ট্রলারে করে হাসপাতালে পাঠায়।

তবে চরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও রফিজল হকসহ অনেকে জানান, ট্রলার বোঝাই করে আসা লোকজন চরে নেমেই বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। জানমাল রক্ষায় চরের বাসিন্দারা তাদের ধাওয়া করে। চরবাসীর উপর হামলা করলে তারা প্রতিহত করে।

নদী ভাঙন কবলিত নেয়ামতপুর চরের জমি নিয়ে পাশ্ববর্তী ভবানিপুর ইউনিয়নের সাথে সীমানা বিরোধ ও মালিকানা নিয়ে একাধিক গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। দেশের বিভিন্ন আদালতে এ নিয়ে মামলা চলমান আছে।

ভবানিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন জানান, সীমানা বিরোধ ও জমির মালিকানা নির্ধারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। জমি মাপার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। এরমধ্যে জমি দখল করতে গেলে এই সহিংসতা হয়।

তবে গোলাম নবীর সাথে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

চরের জমির মালিক পক্ষের নেতৃত্বদানকারী ফেরদৌস আহমেদ জানান, জমির সীমানা বিরোধের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এরমধ্যে গোলাম নবী, লিটন পাটোয়ারী ও সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে কয়েকশ লোক চর দখল করতে যায়। এসময় চরের মানুষ নিজেদের জমি রক্ষায় তাদের প্রতিহত করে।

খবর পেয়ে দৌলতখান থানার ওসির নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছে বলে জানান ভোলা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিপন চন্দ্র সরকার।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE