অনলাইন ডেস্ক : ভোলা সদরের পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামের জরিনা বেগম। পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে চরম অভাবে দিন কাটছে তার। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বিকল্প উপার্জনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই কষ্টে আছে পরিবারটি।
ঈদ এলেও ভালো খাবার বা ছেলে-মেয়েদের জন্য নতুন কাপড় কিনে দিতে পারেননি। উপার্জন বন্ধ থাকায় চরম কষ্টে দান কাটাতে হচ্ছে তাকে।
জরিনা বেগম বলেন, নদীতে মাছ ধরা বন্ধ, ছেলেরা উপার্জন করতে পারছে না, সংসারে অভাব। আর তাই ঈদের সময়ও কষ্টে কাটাতে হচ্ছে।
শুধু জরিনা বেগম নয়, বেশিরভাগ জেলে পরিবারের একই অবস্থা। ঘুরছে না তাদের সংসারের চাকা। ধার-দেনা করে এতোদিন সংসার চালালেও এখন ঈদের সময়ও এভাবেই দিন কাটাতে হচ্ছে।
ইলিশের অভয়াশ্রম রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দু’মাস মাছ ধরা বন্ধের পর কষ্টে দিন কাটিয়েছেন তারা। মাছ ধরা শুরু হতে বাকি এখনও প্রায় ২০ দিন। আর তাই খুশির ঈদেও মলিন মুখ জেলে পরিবারের সদস্যদের।
সালমা বেগম, রোকসানা ও খাদিজাসহ অন্যরা জানান, তাদের উপার্জন হয় নদীতে মাছ শিকার করেই। মাছ ধরাও বন্ধ, উপার্জনও বন্ধ। ধার দেনা করে দিন কাটছে। এখন অপেক্ষা কবে মাছ ধরা শুরু হবে।
জেলে ছিদ্দিক, মহসিন ও আকবর জানান, সরকারি সুযোগ সুবিধা যা পাই তা দিয়ে দিন চলে না, ঈদের সময় ভালো খাবার জুটবে না, সন্তানতের খুশি করাতে পারছি না।
জেলেপল্লি ঘুরে জানা গেল, ঈদ এলেও খুশির বার্তা নেই জেলে পল্লিতে। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় চরম অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের। উপার্জন না থাকায় ঈদের দিন ভালো খাবার বা সন্তানদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেননি তারা। এমন সংকটে ঈদের আগে সরকারি সহায়তা পায়নি বেশিরভাগ জেলে। তবে বিত্তবানরা এগিয়ে এলেও কিছুটা সংকট কাটবে বলে মনে করছেন মৎস্যবিভাগ।
চারদিকে ঈদের আনন্দ থাকলেও তাদের মুখে হাসি ফুটাতে পারেনি এবারের ঈদ। তাই কান্নাভেজা কন্ঠে শুধু অভাব আর শুন্যতার কথাই বলছেন জেলে পরিবারের সদস্যরা।
এমন বাস্তবতায় ঈদের আগে জেলেদের কোনো সহায়তা দিতে পারেনি মৎস্যবিভাগ। তবে সংকট দূর করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান মৎস্য কর্মকর্তারা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঈদের আগে জেলেদের সহায়তা দেওয়া সম্ভব না, তবে প্রথম দু’মাসের ভিজিএফ চাল দেওয়া হয়েছে, বাকি দু’মাসের চাল কিছুদিনের মধ্যে বিতরণ শুরু হবে।
এদিকে জেলেদের ঘামে ভেজা শ্রমে ভোলার অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভূমিকা রাখলেও সেই জেলেদের এমন দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর যেন কেউ কেই।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান