গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেছে। আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেয়রসহ অন্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হবে। পুরোদমে শুরু হবে নির্বাচনী প্রচারণা। ঠিক এই সময়টির অপেক্ষায় প্রার্থীরা। নানা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। তবে বসে নেই ভোটাররাও। প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন তাঁরা। স্বপ্ন দেখছেন একটি পরিচ্ছন্ন, সাজানো-গোছানো নগরের।
গত মঙ্গল ও গতকাল বুধবার সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেল।
ইফতেখার হোসেন। ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থী। সিটি নির্বাচন নিয়ে তাঁর উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে দলীয় প্রতীক খুব একটা বিবেচ্য বিষয় না। বিষয় হচ্ছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা। এমন একজন প্রার্থী চাই, যিনি তরুণদের নিয়ে ভাববেন। পরিচ্ছন্ন, সাজানো-গোছানো নগর উপহার দিতে পারবেন।’ একই ধরনের কথা জানালেন ঢাকার ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন ও রহিম সরকার।
সাবেক দুটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাজীপুর সিটি করপোরেশন। এর আয়তন প্রায় ৩২৯ বর্গকিলোমিটার। গত সিটি নির্বাচনের আগে এখানকার ভোটার ছিল ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮। এবার ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৮ হাজার ২০৪। নতুন ভোটার যোগ হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৬। আবার মোট ভোটারের একটি বড় অংশই তরুণেরা।
গাজীপুর সিটির ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের হিমারদিঘী এলাকার বাসিন্দা সুমি আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারই নতুন ভোটার হয়েছি। তাই প্রতীক দেখে নয়, প্রার্থীর যোগ্যতা দেখেই ভোট দেব।’
১০ নম্বর ওয়ার্ডের মেঘলাল এলাকার তরুণ ভোটার মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, ‘যে প্রার্থীর ব্যক্তি ভাবমূর্তি ভালো না, যোগ্যতার দিক থেকে মেয়র বা কাউন্সিলর হতে পারবেন না, তাঁকে কেন ভোট দেব?’
উত্তরায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা। তিনি গাজীপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। তিনি বলেন, ‘গাজীপুর নোংরা শহর। যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। বৃষ্টি এলেই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সময়ের সঙ্গে মানুষের রুচিবোধও বদলে যাচ্ছে। যিনি এসব সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন, তাঁকেই ভোট দেব।’
আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্বাচনে তরুণেরা অবশ্যই একটি ফ্যাক্টর। তাঁর নিজের বেশির ভাগ কর্মীও তরুণ। এ ছাড়া নতুন ভোটারদের একটি বড় অংশও তরুণ। তরুণদের প্রাধান্য দিয়েই তিনি কাজ করবেন।
বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, এখন সময়টাই তরুণদের। তাঁদের ছাড়া সমাজ এগোবে না। নির্বাচিত হলে তাঁদের ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে সিটির উন্নয়নকাজ করা হবে।