ভূমিহীন থেকে শতকোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া বশিরকে বহিষ্কার

নিউজ ডেস্ক।।

ভোলার চরফ্যাশনের জিন্নাগর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) পদে টানা ২৮ বছর থেকে পঞ্চাশ একর জমি ও প্রায় ৬টি বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানাসহ নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের লুটেরা আলোচিত বশিরুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে জেলা প্রশাসক। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান এই বহিষ্কার আদেশ দেন। শুক্রবার ওই আদেশ কপি পেয়ে চাকরি বাঁচাতে দেনদরবার ও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন ওই সচিব।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, বশিরুল দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তদারকি কর্মকর্তাকে অবহিত না করে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির চাল বিতরণ করেন। তাকে ৩০শে অক্টোবর ওই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বদলি করে লালমোহন উপজেলার চরউমেদ ইউনিয়ন পরিষদে বদলি করা হয়। ৩রা নভেম্বরের মধ্যে তাকে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। ওই কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে তিনি জিন্নাগর ইউনিয়ন পরিষদে বহাল তবিয়তে চাল বিতরণসহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, গেল বছর তাকে বদলি করা হলে তিনি ওই ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে দিয়ে সুপারিশ করান জেলা প্রশাসককে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করতেন। সরকার পতনের পর নিজেকে বিএনপি সমর্থিত ও নেতাদের আত্মীয়স্বজন দাবি করেন তিনি। তার বাধার মুখে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হোসেন পরিষদে যেতে পারছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছেন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।
অভিযোগ রয়েছে, চরফ্যাশন পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডে প্রায় দেড় একর জমিতে তার তিনটি পাকা ভবন রয়েছে। এর একটি তিনতলা বিশিষ্ট, অপরটি দুইতলা ও একটি একতলা বিলাসবহুল ভবন। এ ছাড়া উপজেলার হাসিনার চর, দক্ষিণ আইচা, কুকরিমুকরি ও মজিবনগর ইউনিয়নের চরে নামে- বেনামে প্রায়ই ৫০ একর খাস জমি নিয়ে নিয়েছেন। বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া এই ইউপি সচিবের কাছে ইউপি চেয়ারম্যানরাও জিম্মি ছিলেন এত বছর ধরে।
এ ব্যাপারে বশিরুল বলেন, তার গ্রামের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে। ১৯৯৬ সাল থেকে চরফ্যাশনে চাকরি করছেন। তিনি চরফ্যাশন পৌর এলাকায় জলাভূমি কিনে তা ভরাট করে বাড়ি বানিয়েছেন। বিভিন্ন চরে ৫০ একর জমি তার নামে নেই। ওইসব জমি খালাতো ভাই কামাল, মামাতো ভাই নীরব, কৃষক রিপনের নামে নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ভোলা সদরের কাচিয়ায় এসে জানা যায়, জেলা সদরের কাচিয়া এলাকায় এক সময় বাড়ি ছিল তার। মেঘনার ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে পাড়ি জমান চরফ্যাশনে। এরপরই চরফ্যাশনের সাবেক এমপি জ্যাকবের সঙ্গে পরিচয় হয়ে আলাদিনের চেরাগ খুঁজে পান। আর এই চেরাগেই ভূমিহীন থেকে শতকোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। অবশেষে জেলা প্রশাসক তাকে বরখাস্ত করায় চরফ্যাশনের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE