অনলাইন ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,
মাদকবিরোদী সাঁড়াশি অভিযানে গুলিতে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তাকে ‘আত্মরক্ষায় হত্যা’ বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
মন্ত্রীর ভাষ্য, অপরাধীদের ধরতে গেলে যখন তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করছে তখন আইশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষায় বাধ্য হয়ে তাদেরকে মেরেছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন কামাল।
গত কয়েক দিন ধরে দেশে তুমুল আলোচনা চলছে মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে। গত ৪ মে থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যুর অভিযোগ এসেছে কথিত বন্দুকযুদ্ধে। এর মধ্যে গত পাঁচ দিনেই মারা গেছে ৩১ জন।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই র্যাব বা পুলিশের বর্ণনা একই রকম। মাদকের সন্দেহভাজন কারবারি বা তার সহযোগীরা আক্রমণ চালায় তাদের ওপর। আর গোলাগুলির এক পর্যায়ে নিহত হন ওই কারবারি।
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই বক্তব্য মেনে নিতে নারাজ। তিনি একে বিচারবহির্ভূত হত্যা বলেছেন। বিএনপিও এই অভিযান বন্ধ করে প্রচলিত আইনে বিচারের দাবি তুলেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদক নির্মূলের অভিযান নিয়ে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী হাই প্রোফাইলের যারা মাদকের ব্যবসা করেন তাদের যখনই ধরতে গিয়েছি, হয় তারা পালিয়েছে, নয়ত তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আত্মরক্ষার্থে যা করার তারা তাই করছে।’
‘গেল কয়েক দিনে বেশকিছু মাদক ব্যবসায়ী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আর এসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছে আধুনিক সবধরনের আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। এসব অস্ত্র পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। ফলে এ ধরনের মৃত্যের ঘটনা ঘটছে।’
‘আমরা পরিষ্কার বলছি, আমরা কারও বিরুদ্ধে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ যাচ্ছি না। যারা ফায়ার ওপেন করে তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনী অ্যাকশন নিচ্ছে।’
‘গেল সাত বা আট দিনে শুধু মৃত্যু ঘটনা নয়, দুই হাজারেও অধিক গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিনষ্ট করতে চাই না। তাই যেকোনো মূল্যে মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা সবধরনের প্রচেষ্টা করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মাদক আমাদের দেশে তৈরি হয় না। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে এগুলো ব্যাপকভাবে আমাদের দেশে আসছে। বর্ডারের কোনো কোনো স্থান দিয়ে যখন এসব মাদকদ্রব্য আমাদের দেশে ঢুকছিল তখন আমরা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিলাম না।’
‘আমরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে আমরা কথা বলছি। ভারত ও মিয়ানামারের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। তারা যখন খুব ভালো সহযোগিতা করছিলেন না তখন আমরা বাধ্য হয়েই দেশের অভ্যন্তরে এ ধরনের অভিযান করছি।’
মাদকের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে কামাল বলেন, ‘আপনারা সাক্ষী, ইয়ারা সেবনকারী মেয়ে তার বাবা মাকে খুন করেছে। ইয়াবার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে অনেক বাবা মা কাঁদছে।’
‘আমরা ২০৪১ সালের যে স্বপ্ন (উন্নত বাংলাদেশ গড়ার) দেখছি তা মাদকের জন্য ব্যাহত হবে, এটা হতে পারে না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গি নিধনের জন্য মাদকের সঙ্গে জড়িতদেরও উচ্ছেদে একইভাবে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন।’
‘আমাদের গোয়েন্দাদের তৎপর করছি। সমাজের এলিট সমাজের সবাইকে এর সাথে সম্পৃক্ত করতে চেষ্টা করছি তারা যেন মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।’
‘আমরা বলেছি চলুন আমরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি।’
(আল-আমিন এম তাওহীদ, ২৩মে-২০১৮ইং)